কাতার বিশ্বকাপে আগামীকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় দোহার এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে পর্তুগাল। ইতোমধ্যেই পর্তুগাল আগের দুই ম্যাচে জয়ী হয়ে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করলেও দক্ষিণ কোরিয়ার সামনে সুযোগ আছে ম্যাচে জয় নিশ্চিত করে দ্বিতীয় দল হিসেবে পরের রাউন্ডে যাবার। এজন্য অবশ্য গ্রুপের আরেক ম্যাচে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঘানাকে উরুগুয়ের কাছে হারতে হবে কিংবা ড্র কতে হবে।
ফার্নান্দো সান্তোসের দলের গ্রুপ-এইচ’র শীর্ষস্থানে থেকে নক আউট পর্বে যাবার জন্য এক পয়েন্ট প্রয়োজন। দক্ষিণ কোরিয়া প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের সাথে গোলশুন্য ড্র করে বিশ^কাপ যাত্রা শুরু করেছিল। এরপর অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচে উজ্জীবিত ফুটবল উপহার দিয়েও ঘানার কাছে ৩-২ গোলে হেরে যায়।
পাওলো বেনটোর দল দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও পরপর দুই গোল দিয়ে ম্যাচে সমতায় ফিরে। কিন্তু মোহাম্মদ কুদুসের ৬৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোলে ঘানার পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিশ্চিত হয়। এই জয়ে পর্তুগালের সাথে দ্বিতীয় দল হিসেবে ঘানার সামনে এখন এই গ্রুপ থেকে পরের রাউন্ডে যাবার হাতছানি।
এক পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া রয়েছে তৃতীয় স্থানে। কিন্তু এখনো তাদের সামনে নক আউট পর্বে খেলার সুযোগ রয়েছে। যেকোন মূল্যে পর্তুগালের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করতে হবে। তারা যদি সান্তোসের দলকে পরাজিত কর এবং উরুগুয়ে ঘানাকে হারায় তবে গোল ব্যবধানে যে দল এগিয়ে থাকবে তারাই পর্তুগালের সাথে পরের রাউন্ডে খেলবে। এশিয়ান জায়ান্টরা ২০১০ সালে সর্বশেষ নক আউট পর্বে খেলেছিল। শেষ দুটি আসরেই তারা গ্রুপ পর্ব থেকে বাড়ি ফিরে আসে। এই মুহুর্তে প্রতিপক্ষের দিকে না তাকিয়ে নিজেদের স্বাভাবিক খেলার দিকেই বেশা মনোযোগ দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। ঘানার বিপক্ষে যে ধরনের অল আউট ফুটবল তারা খেলেছে তাতে পর্তুগালকে বাড়তি সতর্কতা নিতেই হচ্ছে। পর্তুগাল যেহেতু নক আউট পর্বে চলে গেছে তাই নিয়মরক্ষান ম্যাচটিতে তাদের মধ্যে কিছুটা নির্লিপ্ততা আসাটাই স্বাভাবিক। যদিও সান্তোস এমন আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছে, আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চায় বেনটোর শিষ্যরা।
ঘানার বিরুদ্ধে ৩-২ গোলের জয় দিয়ে বিশ^কাপ শুরু করেছিল সান্তোসের দল পর্তুগাল। ঐ ম্যাচে গোল করে টানা পাঁচটি বিশ^কাপে গোলের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন পর্তুগীজ সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। দ্বিতীয় ম্যাচে উরুগুয়েকে দাঁড়াতেই না দিয়ে ব্রুনো ফার্নান্দেসের জোড়া গোলে নক আউট পর্বের টিকিট কাছে পর্তুগীজরা।
শেষ ম্যাচের আগে ঘানার থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকেই দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে।
১৯৬৬ বিশ^কাপে পর্তুগাল তৃতীয় ও ২০০৬ সালে চতুর্থ হয়েছিল। কিন্তু ২০০৬ সালের পর থেকে শেষ ষোল পার করতে পারেনি। শেষ তিনটি বিশ^কাপের দুটিতেই গ্রুপ পর্বে তাদের বিশ^কাপ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এবারের আসরের আগে পর্তুগাল ফেবারিট হিসেবে কাতারে খেলতে আসেনি। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে এখন তারা শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের প্রমান করেছে।
উরুর ইনজুরির কারনে হুয়াং হি-চানকে এখনো বিশ^কাপের কোন ম্যাচে নামাতে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া। শুক্রবারের ম্যাচেও এই ফরোয়ার্ডের খেলা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। বেনটোর দলের হয়ে আরো একবার মূল একাদশের আক্রমনে দেখা যাবে তারকা স্ট্রাইকার সন হেয়াং-মিনকে। জাতীয় দলের হয়ে ১০৭তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবেন ৩০ বছর বয়সী সন। রক্ষনভাগ ও মধ্যমাঠের মাঝামাঝিতে থাকবেন নাপোলির কিম মিন-জা। ঘানার বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে দুই গোল করা চু গুয়ে-সুং নিশ্চিতভাবে নিজের পজিশন ধরে রাখবেন।
উরুগুয়ের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধের শেষভাগে বদলী বেঞ্চে চলে গিয়েছিলেন নুনো মেন্ডেস। এই ডিফেন্ডারের কালকের খেলা নিয়ে যথেষ্ঠ শঙ্কা রয়েছে। পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরায় মিডফিল্ডার ডানিলো পেরেইরাও ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন। ওটাভিও ইনজুরিতে রয়েছেন। লেফট-ব্যাকে মেন্ডেসের স্থানে রাফায়েল গুয়েরেইরো খেলবেন।