কাতার বিশ্বকাপে এশিয়ান জায়ান্ট জাপানের বিরুদ্ধে কাল খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্পেন। গ্রুপ-ই’র শীর্ষে থাকা স্প্যানিশরা এই ম্যাচে অন্তত ড্র করতে পারলেই নক আউট পর্বের টিকিট পাবে। তবে ব্লু সামুরাইদের বিপক্ষে জয় তাদের গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে পরের রাউন্ডে পৌঁছে দিবে।
এই সুযোগটি পুরোপুরি কাজে লাগাতে চায় লা রোজারা। কারন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পরের রাউন্ডে উঠলে সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষায় থাকবে গ্রুপ-এফ’র রানার্স-আপ দল। আর সেই দলটি ক্রোয়েশিয়া, মরক্কো কিংবা বেলজিয়ামের মধ্যে যেকোন একটি দল হতে পারে।
এবারের আসরে দ্বিতীয় অঘটনের জন্ম দিয়ে ইতোমধ্যেই চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানীকে পরাজিত করে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে জাপান। উজ্জীবিত জাপানীজরা অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচে লড়াই করেও কোস্টা রিকার কাছে ১-০ গোলে হেরে গেছে। এই মুহূর্তে স্পেনের থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে জাপান ও কোস্টা রিকা। সে কারনেই স্পেনকে হারাতে পারলে শীর্ষ দল হিসেবে জাপান পৌঁছে যাবে পরের রাউন্ডে। আর যদি স্পেন হেরে যায় ও হান্সি ফ্লিকের দল জয়ী হয় তবে গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে জন্য এই দুই দলের মধ্যে গোল ব্যবধান বিবেচনা করা হবে। এ কারনে শেষ ম্যাচে জার্মানী যাতে কোস্টা রিকার কাছে হেরে বিদায় নেয় সেটাই এখন কাম্য স্পেন ও জাপানের কাছে।
স্প্যানিশ অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার কোকে কালকের ম্যাচকে সামনে রেখে স্থানীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমাদের একমাত্র পরিকল্পনা হচ্ছে অল আউট ফুটবল খেলা ও জাপানের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করা। আমরা আগেও এমন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছি। যদিও আমরা প্রতিপক্ষকে ছোট করে দেখছি না। এই একটি পন্থায় আমাদের কাল মাঠে নামতে হবে এবং পরের রাউন্ড নিশ্চিত করতে হবে।’
স্পেন যদি গ্রুপ পর্বের বিজয়ী দল হিসেবে পরের রাউন্ডে গিয়ে শেষ ১৬ জিততে পারে তবে কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হিসেবে ব্রাজিলকে দেখা যেতে পারে। কোকে অবশ্য এতটা দুরের চিন্তা এখনই করছেন না, ‘আমার মনে হয়না কোন দলকে আমরা ভয় পাই। সব আন্তর্জাতিক দলের প্রতি আমাদের সমান শ্রদ্ধা আছে। এই মুহূর্তে আমরা কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে চিন্তা করছি না। কারন আগে আমাদের জাপানের বিরুদ্ধে জিততে হবে। ম্যাচ বাই ম্যাচ এগিয়ে যাওয়াই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। কোয়ার্টার ফাইনালে যদি ব্রাজিলকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাই তবে সেই ম্যাচ নিয়ে ভিন্ন পরিকল্পনা থাকবে। প্রতি ম্যাচেই জয়ের অভিন্ন পরিকল্পনা আমাদের থাকে।’
গ্রুপে এই মুহূর্তে জাপানের পজিশন সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। জার্মানী ও স্পেনের সাথে একই গ্রুপে থাকার পরও শেষ ম্যাচের আগে দ্বিতীয় স্থানে থাকাটাও অনেক বড় বিষয় জাপানের জন্য। যদিও কোস্টা রিকার কাছে হেরে তারা এক ম্যাচ হাতে রেখে পরের রাউন্ডে যাবার সুবর্ন সুযোগ হারিয়েছে। স্পেনের সাথে অন্তত এক পয়েন্ট হলেই পরের রাউন্ড নিশ্চিত হবে এশিয়ান জায়ান্টদের। আর সেটা হলে টানা দ্বিতীয় টুর্ণামেন্টে জাপান এই কৃতিত্ব অর্জণ করবে। কোচ মোরিইয়াসু অবশ্য স্পেনকে বিশে^র অন্যতম সেরা দল হিসেবে বিবেচনা করেই মাঠে নামতে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি বিশ^াস করেন জার্মানীর বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় আরো একবার সমর্থকদের উপহার দেয়া সময়ের ব্যপার। এ সম্পর্কে মোরিইয়াসু বলেছেন, ‘স্পেন বিশে^র সেরা দল। আমরা জিততে চাই এবং তাদেরকে পিছনে ফেলতে চাই। আমরা এই মুহূর্তে এমন এক পরিস্থিতিতে আছে যা পুরো দলকে আবেগী করে তুলেছে। আগের দুই ম্যাচে জয়-পরাজয় এখন অতীত। কাল আমরা সম্পূর্ণ নতুন এক দলের বিপক্ষে মাঠে নামতে যাচ্ছি। জার্মানীর সাথে যা হয়েছে স্পেনের সাথেও সেটা হতে পারে। পুরোটাই আমাদের উপর নির্ভর করছে।