রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের ‘মানবিক’প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যৌথভাবে সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। ১০৯টি দেশ এ প্রস্তাবে সহ-পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, যা ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রেজুশেলনটি বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ ও বাংলাদেশের বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ ও বাংলাদেশ গৃহীত মানবিক প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ন্যায় বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ, আইসিসি, আইআইএমএম ও অন্যান্য দায়বদ্ধতা নিরূপণকারী ব্যবস্থার সাথে যেভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে তা প্রসংশিত হয়েছে এতে। রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং নীতির আওতায় বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে এবারের রেজুলেশনে।
ওই প্রস্তাবে প্রাথমিকভবে কয়েকটি বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যার আরও অবনতি হয়েছে।
রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করার পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সবগুলো মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে রেজুলেশনে।
এছাড়া মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে আঞ্চলিক দেশ ও সংস্থাগুলো– যেমন আসিয়ান এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে সর্বসম্মতিক্রমে আসিয়ান গৃহীত পাঁচ দফা সুপারিশের দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরত্ব দেয়া হয়েছে প্রস্তাবে।
চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরুপণ প্রক্রিয়ার ওপর সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি এবং আন্তজার্তিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউশনের তদন্তকেও স্বাগত জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের এ রেজুলেশনটি রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি বিভিন্ন অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি প্রকাশের একটি অনন্য উদাহরণ। মিয়ানমারের পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকে যাওয়ায় দেশটিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত হচ্ছে যা উদ্বেগজনক।