কাতার বিশ্বকাপে প্রথমারের মত ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন নারী রেফারি। ইতিহাসের অংশ হওয়া ঐ তিন নারী রেফারি হলেন ফ্রান্সের স্টিফেনি ফ্র্যাপার্ট, রুয়ান্ডার সেলিমা মুকানসানগা ও জাপানের ইওসিমি ইয়ামাশিতা।
বিশ্বকাপ পরিচালনার জন্য ফিফার তালিকাভুক্ত ৩৬ জন রেফারির মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন এই তিন নারী রেফারি। এছাড়াও সহকারী রেফারি হিসেবে আরো তিন নারী রেফারি কাজ করবেন। তারা হলেন ব্রাজিলের নুয়েজা ব্যাক, মেক্সিকোর কারেন দিয়াজ মেডিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাথরিন নেসবিট। ইতোমধ্যেই পুরুষ ম্যাচ পরিচালনার অভিজ্ঞতা দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতেই ফ্র্যাপার্টরা কাতারে যাচ্ছেন। নারীদের বিশ্বকাপের মত বড় আসরে ম্যাচ পরিচালনার সুযোগ করে দেবার পর ফিফা রেফারি কমিটির প্রধান পিয়ারলুইগি কোলিনা বলেছেন, ‘এখানে আমরা স্পষ্টভাবে একটি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছি, সেটা হলো যোগ্যতা। এখানে নারী-পুরুষ আলাদা কোন বিষয় নয়।’
৩৮ বছর বয়সী ফ্র্যাপার্ট ইউরোপে শীর্ষ পর্যায়ে রেফারিং করে যে পরিমান প্রশংসা কুড়িয়েছেন তাতে বিশ্বকাপে তার সুযোগ পাওয়া সময়ের ব্যপার ছিল। ২০১৯ সালে ফরাসি লিগ ওয়ানে প্রথম নারী হিসেবে ফ্র্যাপার্ট ম্যাচ পরিচালনা করেন। একই বছর ঘরের মাঠে নারী বিশ্বকাপের দায়িত্ব পান। ২০১৯ সালে লিভারপুল বনাম চেলসির মধ্যকার উয়েফা সুপার কাপের ফাইনাল ম্যাচটিতে ফ্র্যাপার্ট রেফারি ছিলেন। ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও গত মৌসুমে ফরাসি কাপের ফাইনাল ম্যাচ পরিচালনা করেন। এসব অভিজ্ঞতা কাতারে কাজের সুযোগ পেতে সহযোগিতা করেছে।
এ সম্পর্কে ফ্র্যাপার্ট বলেছেন, ‘আমি সত্যিকার অর্থেই বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে কাজ করতে মুখিয়ে আছি। বিশ্বকাপে থেকে বড় কিছু হতে পারেনা।’
ফ্র্যাপার্টের থেকে বয়সে দুই বছরের ছোটা ইয়ামাশিতাও একইভাবে জাপানে পুরুষদের বেশ কিছু শীর্ষ পর্যায়ের ম্যাচ পরিচালনা করে নিজের যোগ্যতা প্রমান দিয়েছেন। ২০১৯ সালে প্রথম নারী রেফারি হিসেবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। চলতি বছরের শুরুতে তিনি পেশাদার লাইসেন্স পান। আর এ কারনেই পার্ট-টাইমার হিসেবে কাজ করা ফিটনেস ট্রেনারের চাকরিটাও ছেড়ে দিয়েছেন। ইয়ামাশিতা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘বিশ্বকাপ অনেক বড় একটা দায়িত্ব। কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে আমি দারুন খুশী। এই ধরনের সুযোগ কখনো সামনে আসবে তা কল্পনায়ও ছিলনা।’
৩৪ বছর বয়সী মুকানসানগা চলতি বছর জানুয়ারিতে আফ্রিকান নেশন্স কাপে প্রথম নারী রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালনে সফলতা দেখানোর পর বিশ্বকাপে কাজ করার সুযোপ পান। রুয়ান্ডার এই রেফারির স্বপ্ন ছিল একজন পেশাদার বাস্কেটবল খেলোয়াড় হবার। কিন্তু মাত্র ২০ বছর বয়সে নারীদের ঘরোয়া লিগে তিনি ম্যাচ পরিচলনা করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।