বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যুসহ বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার আহত হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব উইংয়ের মহাপরিচালক মো. নাজমুল হুদা। এ নিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে চারবার তলব করা হলো।
রোববার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো-কেসহ দুজন প্রতিনিধি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছালে ১৫ থেকে ১৭ মিনিট অপেক্ষা করিয়ে রাষ্ট্রদূতসহ দু’জন প্রতিনিধিকে মহাপরিচালক মো. নাজমুল হুদার দপ্তরে ডেকে নেয়া হয়। পরে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্যাগ করেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে গোলাগুলি চলে। ওই ঘটনায় রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এছাড়া ওই ঘটনায় এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। তারা এখন হাসপাতালে চিকৎসাধীন রয়েছেন।
বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের বিমান প্রবেশ, বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় মিয়ানমার ভূখণ্ডে থেকে ছোড়া একটি গুলি এসে পড়া, মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়া এবং মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল বাংলাদেশ সীমান্তে পড়ার ঘটনায় প্রায় মাসখানেকের কম সময়ের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে চার বার ডেকে কড়া প্রতিবাদ করেছে ঢাকা। প্রতিবারই তার হাতে নোট ভার্বাল ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পাঁচ বছর ধরে আশ্রয়শিবির গড়ে তুলে বাস করছে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ৪ হাজার ২০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা। আশ্রয়শিবির ঘেঁষে (পেছনে) মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়া ও রাখাইন রাজ্যের একাধিক পাহাড় রয়েছে।
সীমান্তের এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে টহল জোরদার করেছে বিজিবি। নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে চলাচল। বারবার সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দেয়ায় স্থানীয়রাও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।