প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হয়েছে।
নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বর্ধিত বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, রোহিঙ্গা সমস্যা, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার প্রতিরোধে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আলোচনার শীর্ষে রয়েছে।
বৈশি^ক অর্থনৈতিক মন্দা ও কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ার দুই নিকট প্রতিবেশি দেশের শীর্ষ পর্যায়ের এই সফর বিনিময়কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সংকট কাটিয়ে উঠতে বর্ধিত সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনার আগে দুই প্রধানমন্ত্রী একান্ত আলাপচারিতায় মিলিত হন।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে পানি ব্যবস্থাপনা, রেলওয়ে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং তথ্য এবং সম্প্রচার বিষয়ে বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও বিনিময় প্রত্যক্ষ করবেন।
এরআগে হায়দ্রাবাদ হাউসে পৌঁছালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। তাঁকে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সেখানে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। এসময় দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়।
আলোচনা শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে হায়দ্রাবাদ হাউসে নরেন্দ্র মোদি আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তাঁর যেগদানের কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে আসার মাধ্যমে ভারতে তাঁর চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিন শুরু করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী এ দিন রাজঘাটে ভারতের জাতির পিতা মহত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তাঁর ভারত সফরের প্রথম দিনে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর গতকাল বিকেলে হোটেলের সামিট রুমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এরপর তিনি নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগাহ পরিদর্শন করেন এবং সেখানে নফল নামাজ আদায় ও ফাতেহা পাঠ করেন এবং দেশ ও জাতির এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি ও কল্যাণের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করেন।
পরে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি একই স্থানে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে সন্ধ্যায় ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দেন।
৭ সেপ্টেম্বর, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি. কিষাণ রেড্ডি এবং নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন।
একই দিনে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে একটি বৈঠক এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের সরাসরি বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদানের একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানের খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরীফ, আজমির (আজমির শরীফ দরগাহ) পরিদর্শন করবেন।
এর আগে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় সকাল ১১ টা ৪০ মিনিটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান।
কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার আগে শেখ হাসিনা ২০১৯ সালে শেষবার সফর করার পর তিন বছর পর ভারত সফর করছেন।