বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার্থে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার হ্রাস করারর দাবী জানিয়েছেন।
তারা বলেন, জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্য পরিবেশের যথেষ্ট ক্ষতি করে। তামাক চাষ ফসলী জমি ও পরিবেশের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করে। এজন্য জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার্থে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে।
বিশ^ তামাকমুক্ত দিবস ২০২২ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের আরবান প্রাইমারী হেলথ প্রকল্প কেন্দ্রে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় দি ইউনিয়ন কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, সিটিএফকে-বাংলাদেশ গ্রান্টস ম্যানেজার মো. আবদুস সালাম মিয়া, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস হেড অব প্রোগ্রাম্স-বাংলাদেশের মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার উম্মে জান্নাতের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন আক্তার রিনি।
‘তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের ধূমপায়ীরা তাদের নিজেদের অজান্তেই শরীরে দীর্ঘমেয়াদী রোগের বাসা বাঁধিয়ে ফেলেন। এতে কেবল তিনি নিজের ক্ষতিই নয়, পরোক্ষ ধূমপান দ্বারা তার আশেপাশের মানুষদেরও ক্ষতি করেন সমান ভাবে।
অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, কারিগরি পরামর্শক, দি ইউনিয়ন, বাংলাদেশ বলেন, ধূমপান সকলের জন্যই ক্ষতিকর হলেও কম বয়সীদের জন্য আরো বেশি ক্ষতিকর। এটি তাদেরকে শারীরিকভাবে ক্ষতির পাশাপাশি আর্থিক ও মানসিক ভাবেও পিছিয়ে দেয়। উপরন্তু তামাকজাত দ্রব্য দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশেরও ক্ষতি করে।
আবদুস সালাম মিয়া বলেন, তামাকজাত পণ্যের ব্যবহারে কেবল নিজেরই স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হয় না, বরং পরিবার সহ আশেপাশে মানুষজনও পরোক্ষ ক্ষতির শিকার হন। এর পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির দিকটি তো রয়েছেই।
শফিকুল ইসলাম বলেন, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার স্বাস্থ্য, জাতীয় অর্থনীতি ও পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন, আইন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে এটি কার্যকর করার জন্যও সংশ্লিষ্ট সকলকে ভূমিকা রাখতে হবে।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে মোট ৭১ বিলিয়ন সিগারেট শলাকা উৎপাদিত হয়েছে। সিগারেটের ফেলে দেয়া ফিল্টার প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে প্রায় এক দশক সময় নেয়, আর মিশে যাওয়ার সময় এ থেকে সাত হাজারের বেশি রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। এসময় তিনি বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনের উপরও জোর দেন।
এর আগে ৩১ মে সকালে তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি)-এর উদ্যোগে আয়োজিত র্যালিতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন অংশগ্রহণ করে।