বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট সরবরাহ নিশ্চিত এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ধারা বেগবান করতে নিয়ম বহির্ভূত কাঁচা পাট মজুদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে।
তিনি আজ দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের (বিজেএ), বাংলাদেশ জুট মিলস এসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠককালে এ কথা বলেন।
এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুর রহমান, বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী, বাংলাদেশ জুট মিলস্ এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সেখ নাসির উদ্দিনসহ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, সম্প্রতি দেশে কাঁচাপাটের সংকট তৈরীর কারণে পাটকলসমূহ উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে। এ অবস্থায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কাঁচাপাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
তিনি বলেন, এজন্য লাইসেন্স বিহীন অসাধু ব্যবসায়ীগণকে কাঁচাপাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ হতে বিরত, ভেজাপাট ক্রয়-বিক্রয় রোধ ও বাজারে কাঁচাপাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে ।
মন্ত্রী বলেন, কাঁচাপাটের ডিলার ও আড়তদারগণ এক হাজার মণের বেশী কাঁচাপাট এক মাসের বেশী সময় ধরে মজুদ করতে পারবে না। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
পাটমন্ত্রী আরো জানান, চলতি পাট মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, পাট চাষ নিশ্চিতকরণে বীজ সরবরাহ সঠিক রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচবছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে।
তিনি জানান, প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি নির্ভরতা আর থাকবে না। এ পাট মৌসুম থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হবে। ধাপে ধাপে তা আগামী পাঁচবছরে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে।
মন্ত্রী আরো জানান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় উচ্চফলনশীল পাট বীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন এবং মানসম্মত পাট উৎপাদনে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-এর আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রকল্পের অধীন তালিকাভুক্ত সকল পাটচাষীকে বিনামূল্যে উফশী জাতের পাটবীজ সার (ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপিও) এবং বালাইনাশকসহ কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।
চলতি ২০২১-’২২ অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৬৯৮ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। রপ্তানি আয়ে পাটখাত চামড়া খাতকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।