ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া দরিদ্র শিক্ষার্থী সৌরভ দাসের পড়াশোনার খরচ বহন করার আশ্বাস দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক। স্নাতক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত সৌরভকে পড়াশোনার খরচ হিসেবে প্রতি ছয় মাস পর-পর ২৫ হাজার টাকা করে দেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শাহগীর আলম গতকাল নিজ কার্যালয়ে পড়াশোনার খরচ বাবদ প্রাথমিকভাবে সৌরভের হাতে নগদ ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন।
জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কানিউচ্ছ গ্রামের বিষ্ণু দাস ও চম্পা রাণী দাসের ছেলে সৌরভ। চলতি শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান তিনি। তার বাবা বিষ্ণু দাস চট্টগ্রামে ফেরি করে স্টিলের হাঁড়ি-পাতিলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করেন।
সৌরভের শৈশব-কৈশোর কেটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার নবীনগর উপজেলার সুহাতা গ্রামে। সেখানে থেকেই এসএসসি পাস করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে দেন এইচএসসি পরীক্ষা। ভালো ফল করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর কীভাবে পড়াশোনা চালাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি।
সৌরভ দাস জানান,অভাব-অনটনের সংসারে এক-আধবেলা খেয়েই তাকে পড়াশোনা করিয়েছেন মা-বাবা। জীবনের লড়াইয়ে ক্লান্ত মা-বাবাকে এবার অবসর দিতে চান তিনি। তবে শহরের বাস্তবতায় এসে তিনি বুঝতে পেরেছেন, সে পথ এখনও অনেক দূর। পরিচিত কয়েকজনের সহায়তায় ভর্তির খরচ মিটিয়ে কোনো ভাবে চলছেন তিনি।
বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সৌরভকে ডেকে নিয়ে যান জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম। এ সময় সৌরভের পড়াশোনা ও পারিবারের বিষয়ে খোঁজ নেন। তিনি সৌরভকে পড়াশোনার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত পড়াশোনার খরচ হিসেবে সৌরভের হাতে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল হক, স্কুল শিক্ষক স্বপন মিয়া।
এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম বলেন, আমরা সৌরভের পড়াশোনার সব দায়িত্ব নিয়েছি। স্নাতক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত সৌরভকে পড়াশোনার খরচ হিসেবে প্রতি ছয় মাস পর পর ২৫ হাজার টাকা করে দেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন। আশা করি এতে তার খাতা-বই কেনাসহ পড়ার খরচ হয়ে যাবে।