বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম আসা তালেবান নেতা মোল্লা মোহাম্মাদ হাসান আখুন্দ। গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত এই নেতা ২০ বছর আগেও পালন করেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
তিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন, তার আভাস চলতি সপ্তাহের আগে তেমন একটা মেলেনি। মোল্লা মোহাম্মাদ হাসান আখুন্দকে তালেবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী করা নিয়ে পশ্চিমাদের যেমন অস্বস্তি রয়েছে, তেমনি তালেবানে ফিরে এসেছে স্বস্তি।
১৫ আগস্ট কাবুল নিয়ন্ত্রণে আসার পর দীর্ঘ সময় নিয়ে ৭ সেপ্টেম্বর সরকার গঠন করেছে তালেবান। কিন্তু বহু বছর ধরে জাতিসংঘের সন্ত্রাসীর তালিকায় তার নাম থাকায় তাকে নিয়ে বিতর্ক চাউর হয়েছে পশ্চিমাদের মধ্যে।
মোল্লা আখুন্দের জন্ম কান্দাহার প্রদেশে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালেবান ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তৎকালীন উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন আখুন্দ।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ওমরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাকে। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানের পর তালেবানকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করা হয়।
এরপর গঠন করা হয় তালেবানের শক্তিশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা ‘রেহবারি শুরা’। এর নেতৃত্বে পরিষদের প্রধান ছিলেন আখুন্দ। তিনি সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার ভূমিকা পালন করেন।
হাসান আখুন্দ তার ডেপুটি হিসেবে পাচ্ছেন জ্যেষ্ঠ নেতা মোল্লা আব্দুল ঘানি বারাদারকে। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে মোল্লা হেদায়েতউল্লাহ বাদরি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দীন হাক্কানি, মোল্লা ওমরের ছেলে ইয়াকুব প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মৌলভী আমির খান।
মঙ্গলবার আফগানিস্তানে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে তালেবান। এছাড়া দেশটিকে ইসলামি আমিরাতও ঘোষণা করেছে তারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের হন্যে হয়ে খোঁজা হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজউদ্দিন হাক্কানি। গত দুই দশকে তালেবানের সবচেয়ে প্রাণঘাতি হামলাগুলোর জন্য দায়ী করা হচ্ছে হাক্কানি নেটওয়ার্ককে।
যার মধ্যে ২০১৭ সালে একটি ট্রাক বোমা বিস্ফোরণও রয়েছে। ওই হামলায় ১৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। হাক্কানি নেটওয়ার্ককে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আল-কায়েদার সঙ্গেও এই নেটওয়ার্কের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
১৫ আগস্ট আগের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের অধিকাংশ অংশ দখল করে তালেবান।