জেলায় পাটের কদর বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ভালো বাজার মূল্য পাচ্ছে । ফলে পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের। বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছর পাট চাষ বেড়েছে এ উপজেলায়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাটচাষিদের সাথে কথা হলে জানান, প্রতিবছর লাভ-ক্ষতির হিসাব না করেই পাটচাষ করেন উপজেলার কয়েক শত কৃষক। শুরু থেকে উৎপাদন খরচ বেশি ও পাটগাছ থেকে আঁশ ছাড়ানোর শ্রমিক সংকটের মধ্যে কাঙিক্ষত দাম না পাওয়াতে হতাশ ছিলো কৃষকরা। তবে বর্তমানে পাটের বাজার দর পেয়ে খুশি উপজেলার পাট চাষিরা।
উপজেলা পাট কর্মকর্তা চায়না খাতুন বলেন, সোনালী আঁশ খ্যাত পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ ফিরে আনতে গত বছর ২ হাজার কৃষকের মাঝে বিনামুল্যে সার ও বীজ প্রদান করা হয়। চলতি বছর কৃষকের আগ্রহ এবং উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে ২ হাজার ৯শ’ কৃষকের মাঝে সার ও বীজ প্রদান করা হয়। এ মৌসুমে পাটের ভালো ফলন ও মূল্য পাওয়ায় লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। বাজারদর এরকম থাকলে পাট চাষে আরও আগ্রহী হবেন কৃষকরা। কৃষি কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৮শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি করছে চাষিরা।
পাট চাষি কিশোরগাড়ীর লাল মিয়া, রামপুরার ওসমান গণী, রওশনপুরের মিলন সরকার জানান, পাট চাষের শুরুতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট বড় হতে দেরি হয়েছে। পরে বৃষ্টি হওয়াতে শুধু পাট গাছ বড় হয়েছে। আঁশ তেমন মোটা না হওয়ায় ফলন একটু কম হয়েছে। তবে দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হয়েছি। এরকম বাজার থাকলে আগামীতেও পাট চাষ অব্যাহত থাকবে। উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের পাট চাষি আব্দুল খালেক জানান, গত বছরে প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছে, ১৫শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা। প্রতি একরে ফলন হয়েছে ১৬ থেকে ২২ মণ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রায় ২ হাজার ৩শত হেক্টর জমিতে তোষা এবং দেশী পাট চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২২ হাজার ৮শত মেট্রিক টন। পাট একটি পরিবেশবান্ধব অর্থকারী ফসল এবং পাটের বহুবিধ ব্যবহারের ফলে বিশ্ব বাজারে পাটজাত পণ্যেও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক পাটের মূল্য ভালো পাচ্ছে। ফলে নতুন কৃষক পাট চাষে আগ্রহী হচ্ছে।