ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা আড়াই মাস ধরে চালানো এ হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।
এ পরিস্থিতিতে গাজায় আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলি জাহাজের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে মালয়েশিয়া। এমনকি দেশের বন্দরে ইসরায়েলের পতাকাবাহী কোনো জাহাজ নোঙর করতে না দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি।
আজ বুধবার (২০ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
বুধবার এক সরকারি বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কার্যালয় বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় জিআইএম শিপিং কোম্পানির ওপর অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা ও বর্বরতা’ চালাচ্ছে।
একই সময়ে মালয়েশিয়া বলেছে, তারা এখন থেকে দেশে ইসরায়েলের-পতাকাবাহী জাহাজ নোঙর করতে দেবে না। এ ছাড়া ‘ইসরায়েলগামী যেকোনো জাহাজের মালয়েশিয়ার বন্দরে পণ্য লোড করার ওপরও নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করছে মালয়েশিয়া।
এই উভয় নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
পৃথক প্রতিবেদনে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয় মেইল জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার সমস্ত বন্দরে নোঙর করা থেকে ইসরায়েল-ভিত্তিক শিপিং কোম্পানি জিআইএম-এর মালিকানাধীন জাহাজের ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে মালয়েশিয়ার সরকার ঘোষণা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, পরিবহন মন্ত্রণালয়কে অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে চলমান ক্রমাগত গণহত্যা ও বর্বরতার বিষয়ে ইসরায়েলের মৌলিক মানবিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়া হিসাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’
আনোয়ার বলেন, ২০০২ সালে মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা ইসরায়েলে-নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোকে মালয়েশিয়ায় নোঙর করার অনুমতি দেয়; এবং ২০০৫ সালে ইসরায়েলি-নিবন্ধিত জাহাজগুলোকে মালয়েশিয়ায় নোঙর করার অনুমতি দেয়।
তবে তিনি বলেন, আগের সেই সিদ্ধান্তগুলো এখন প্রত্যাহার করা হয়েছে। আনোয়ার আরও বলেন, ইসরায়েল অভিমুখী যে কোনও জাহাজের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার বন্দরগুলোতে পণ্য লোড করার বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মালয়েশিয়া।
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া নিশ্চিত যে, এই সিদ্ধান্ত চলমান বাণিজ্য কার্যক্রমকে প্রভাবিত করবে না।’
উল্লেখ্য, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশ মালয়েশিয়া দীর্ঘকাল ধরে ফিলিস্তিনের সোচ্চার সমর্থক এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিরোধের সমাধান হিসেবে দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে কথা বলে এসেছে। এছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কও নেই।