ছোটখাটো পরিত্যক্ত লোহার টুকরো। সেগুলো দিয়ে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সুরেলা গিটার। কিংবা আকার পাচ্ছে পাখি, ফুল, নারী ও প্রকৃতির। অনেকটা তার হাতের ছোঁয়ায় যেন প্রাণ পায় লোহা বা স্টিলের ভাস্কর্যগুলো। এ ছাড়া তৈরি করা হয়েছে ধর্মীয় বিষয় মনুমেন্ট। এগুলো শোভা পাচ্ছে কুমিল্লার নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়, ব্যাপারী পুকুর পাড় ও ধর্মসাগর পাড়ে।
কুমিল্লার ছেলে জুনায়িদ মোস্তফা। এ শহরে তার বেড়ে ওঠা। শৈশবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আবাসিক শহর হিসেবে দেখেছেন কুমিল্লাকে। সেই কুমিল্লা নগরীকে তিনি তার শিল্পকর্ম দিয়ে সাজাতে চান। এ ছাড়া তিনি কুমিল্লার শচীন দেব বর্মণের বাড়ির বাউন্ডারিসহ বিভিন্ন দেয়াল রাঙিয়ে তুলেছেন।
পেশায় বিজ্ঞাপন নির্মাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র জুনায়িদ মোস্তফা। তিনি বাসসকে বলেন, আমি ছাপচিত্র নিয়ে পড়েছি। তবে মেটাল নিয়ে কাজ করার আগ্রহ ছোটবেলা থেকে। ভাঙাড়ি থেকে কিছু কাজ করেছি। সেখানে মূল্যবান লোহাও রয়েছে। এ ছাড়া নতুন মেটাল দিয়ে বিভিন্ন কাজ করেছি।
বাবা সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা চৌধুরী। তাকে দেখেছি, সাংবাদিকতার পাশাপাশির শিক্ষা, চিকিৎসায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। সেই ধারা থেকে আমারও ইচ্ছা হলো নিজের শহরের জন্য কিছু করার। আমি একটু আঁকতে আর ভাস্কর্য বানাতে পারি। তাই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নেমে পড়ি। প্রথমে ডাস্টবিন রঙিন করি। যেন মানুষ ডাস্টবিনকে গুরুত্ব দেয়। বাইরে ময়লা না ফেলে শহরকে যেন পরিষ্কার রাখে।
এ কাজে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, সাংস্কৃতিক সংগঠক নাজমুল হাসান পাখী, স্ত্রী জানভীসহ কিছু সৃজনশীল মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি। নগরীকে সুন্দর করে সাজানোর খুব ইচ্ছা আমার। সাংস্কৃতিক সংগঠক নাজমুল হাসান পাখী বাসসকে বলেন, জুনায়িদের কাজগুলো ব্যতিক্রম। তার মতো সবাইকে নিজ অবস্থান থেকে পরিবেশ সাজাতে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
কুমিল্লা সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, জুনায়িদ এর আগে শহরকে সুন্দর রাখতে ডাস্টবিনে আর্ট করেছেন। এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সবাই এগিয়ে না এলে শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখা যাবে না। আমার অবস্থান থেকে তাকে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা করব।