বিএনপি ভোটে না আসায় ‘স্বস্তি-অস্বস্তির’ প্রসঙ্গে না গিয়ে এখন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকেই এখন নজর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের। তবে বিএনপির ভোটে এলে ভালো হত বলে মনে করেন তিনি।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপি ছাড়া ভোট আয়োজনে স্বস্তিবোধ করছেন কিনা জানতে চাইলে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, অস্বস্তি বা স্বস্তি কোনটিই আমার মধ্যে নেই। আমার দায়িত্বটা হচ্ছে নির্বাচনটা যেভাবে করতে হয় আমরা নির্বাচন কমিশন সরকারের সহায়তা নিয়ে অর্থাৎ পুলিশ, প্রশাসন সকলের সহায়তা নিয়ে নির্বাচনটা করতে চাচ্ছি। আমার ব্যক্তিগত স্বস্তি, অস্বস্তিটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে এটা ঠিক যে, নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল তারা পার্টিসিপেট করছে না। পার্টিসিপেট করলে অনেক ভালো হত। আপনারা জানেন, আমরা প্রথম থেকেই তাদেরকে আহ্বান জানিয়েছিলাম যে, আপনারা অংশগ্রহণ করুন। তারা সাড়া দেননি।
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, যেটা আগে বলেছি- (বিএনপি) অংশগ্রহণ করলে নির্বাচনটা আরও বেশি ইনক্লুসিভ ও পার্টিসিপেটরি হবে। এখন না নিলে কি হতো, হবে- সে বিষয়ে আমি যাচ্ছি না। অংশ নিলে ভালো হত, এটা সকলেই ফিল করে।
বিএনপি ছাড়া ভোটের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি পরে দেখা যাবে বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।
জাতীয়, আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতার জন্য এটি সমস্যা হবে কি না জানতে চাইলে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আমি সেই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। সেটি নির্বাচনের পরে দেখা যাবে।”
বিদেশিদের ‘চাপ-থাবা’ এখনো রয়েছে কিনা জানতে চাইলে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে তিনি বলেন, বারবার একটি শব্দ শুনি চাপ, চাপ, চাপ। যেটা হল সব দেশ আমাদের নির্বাচন সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছে। আমাদের ডোনার কান্ট্রিজগুলো দেখতে চাচ্ছে নির্বাচন। সেটাকে চাপ বলেন বা এটা সেন্সেটাইজেশন বলেন, ওরা যে দৌঁড়ঝাপগুলো করছে আমরা দেখেছি এবং যার ফলে সরকারও বারবার বলেছে যে, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু হবে। আমাদের তরফ থেকেও আমরা বলেছি যে, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু হবে।
ভোট বর্জনকারীরা নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে, এ নিয়ে আপনাদের অবস্থান কী, এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, প্রতিহত যদি উনারা করতে চান এটা উনাদের রাজনৈতিক পলিসি। সেটার নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা কেবল নির্বাচনটা পিসফুললি করতে চাই।
তিনি বলেন, আমাদের তরফ থেকেও আমরা বলেছি নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু হবে। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটিতে একটা মেম্বার এবং কমিটি অব নেশনসে আমরা সদস্য। আন্তর্জাতিকভাবেও নির্বাচনটা সুন্দর হোক, স্বচ্ছ হোক, সবার কাছে বহির্বিশ্বের কাছেও নির্বাচনটা একটা ভালো গ্রহণযোগ্যতা পাক সেই প্রত্যাশা সবার মধ্যে, আমাদেরও আছে। আমাদের দিক থেকে ফ্রি ফেয়ার এবং পিসফুল নিশ্চিত করার জন্য আমরা জোর দিচ্ছি।
এর আগে জাপানের পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি।
এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে জাপান একটি দল পাঠাবে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কিছু সদস্য আসবেন জাপান থেকে আর বাকিরা বাংলাদেশে জাপান অ্যাম্বাসি থেকে স্টাফরাও অবজারভার হিসেবে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নির্বাচনটাকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেজন্য ওরা অবজার্ভ করতে চাচ্ছেন। আমরা তাদেরকে থ্যাঙ্কস দিয়েছি। তারা আরও বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। মনোনয়নপত্র জমা, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর আমরা তাদেরকে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে সর্বশেষ অবস্থা জানিয়েছি।