দুই দশকের বেশি সময় পর আবারও এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী হলো ভারতের লোকসভা। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীকে হঠাৎ করে দর্শক গ্যালারি থেকে অধিবেশন কক্ষে লাফ দিলো দুই ব্যক্তি। এসময় “স্বৈরতন্ত্র চলবে না” এবং “জয় ভীম” স্লোগান দিয়ে চেয়ার-টেবিলের ওপর উঠে হলুদ গ্যাস নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে পুরো অধিবেশনজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দেশটির এমপিরা। নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীয় দলের সংসদ সদস্যরা।
লোকসভায় সংসদ সদস্য অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, দুই তরুণ হঠাৎ গ্যালারিতে লাফিয়ে নেমে পড়ে এবং তারা গ্যাস ছুড়তে থাকে। এসময় সংসদ সদস্য ও নিরাপত্তা রক্ষীরা তাকে ধরে ফেলে। দুপুর ২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি ছিল।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ওই দুজনকে আটক করা হয়েছে। আটক দুজনের একজনের নাম আমন শিন্ডে আর অপরজন হলেন নিলম সিনহা, তারা দুজন যথাক্রমে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার বাসিন্দা।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় সংসদ সদস্য সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আচমকাই এমন হামলায় তারা হতভম্ব হয়ে পড়েন। এমনকী, অজ্ঞাতপরিচয়রা গুলি চালাতে পারে বা বোমা ছুড়তে পারে প্রাথমিকভাবে এমনও আতঙ্ক তৈরি হয় তার মনে। যদিও দুজনকে আটক করা গেছে বলেও জানান তিনি। কী করে লোকসভায় এমন ঘটতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলে নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ তোলেন তিনি।
এদিকে বিজেপি সংসদ সদস্য দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জানান, হঠাৎ দর্শকাসন থেকে লাফ মারে দুই হামলাকারী। প্রাথমিকভাবে তার মনে হয়েছিল, হয়তো কোনো সদস্য পড়ে গেছেন। পরে দেখা যায় বিষয়টা অন্য। কিন্তু কী করে এমন নিরাপত্তায় গলদ দেখা দিলো?
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দিলীপ বলেন, ওরা হয়তো দর্শক হিসেবেই প্রবেশ করেছিল প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়ে। কিন্তু কী করে জুতোয় করে গ্যাস ক্র্যাকার নিয়ে তারা প্রবেশ করলো তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দিলীপ।
এখন পর্যন্ত যা তথ্য মিলছে তা থেকে দাবি করা হচ্ছে, ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে ছিল স্মোক গ্রেনেড। কী করে তারা তা পেল, এর পিছনে কোনো গোষ্ঠীর হাত আছে কিনা তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। বুধবারই ভারতীয় সংসদে হামলার ২২ বছর পূর্তি। সেদিনই এই হামলার ফলে দুইয়ের মধ্যে কোনো যোগ আছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
সূত্র: আনন্দবাজার