![](https://bangla.thenewstimesbd.com/wordpress/wp-content/uploads/2021/08/Highcourt.jpg)
অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ সব ক্ষতিকর গেম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম তথা লাইকির মত সব ধরনের অনলাইন গেম এবং অ্যাপস বন্ধের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট পিটিশনের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব বাসস’কে আদালতের আদেশের বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ সব ক্ষতিকর গেম অবিলম্বে তিন মাসের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম তথা লাইকির মতো সব ধরনের অনলাইন গেম এবং অ্যাপস অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশনা চেয়ে গত ২৪ জুন রিটটি দায়ের করা হয়।
সুপ্রিমকোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এ রিট দায়ের করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশের আইজিসহ ১০ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়।
এর আগে গত ১৯ জুন অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম সব ধরনের অনলাইন গেম এবং অ্যাপস বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, এবং ফ্রি ফায়ার এর মতো গেম গুলিতে বাংলাদেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোররা ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়ে পড়েছে মেধাহীন। এসব গেমস যেন যুব সমাজকে সহিংসতা প্রশিক্ষণের এক কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। অন্যদিকে টিকটক, লাইকি অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে দেশের শিশু কিশোর এবং যুব সমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে।
অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে এবং সারাদেশে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হচ্ছে। টিকটক অনুসারিরা বিভিন্ন গোপনীয় জায়গায় পুল পার্টির নামে অনৈতিক বিনোদনসহ যৌন কার্যক্রমে লিপ্ত হচ্ছে। এছাড়াও সম্প্রতি নারী পাচার এবং বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের ঘটনায়ও ঘটছে। যেটা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এবং দেশের জনস্বার্থ, শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধের পরিপন্থী। এছাড়াও দেশের শিশুরা বিভিন্ন অনলাইন গেমগুলোতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে।
নোটিশে বলা হয়, এ বিষয়টি মনিটর করার জন্য এবং সময়ে সময়ে শিশুদের জন্য উপযোগী এবং যথাযথ অনলাইন গেমগুলোকে সুপারভাইজ করার জন্য একটি মনিটরিং টিম গঠন করা অত্যন্ত জরুরি। তাই সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেমস এবং টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভের মতো ক্ষতিকারক অ্যাপসগুলোকে অবিলম্বে অপসারণ করা এবং সব লিংক বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়। একই সঙ্গে এই সব বিষয় মনিটরিং করার জন্য এবং শিশুদের উপযোগী যেসব অনলাইন গেমস রয়েছে সেগুলি সুপারিশ করার জন্য একটি মনিটরিং, ইভালুয়েশন এবং সুপারিশ কমিটি গঠন করার জন্য অনুরোধ করা হয় নোটিশে। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বলে জানান আইনজীবীরা।
সম্প্রতি নেপালে পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। বাংলাদেশেও পাবজি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল, পরে আবার চালু করা হয়।