রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে আনা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মোঃ আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
ফলে এই মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
তিনি জানান, আদালত বলেছেন যে, আপিল বিভাগ আসামিদের রিভিউ খারিজ করে দিয়েছেন। এই মুহূর্তে রিট শোনার সুযোগ নেই।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এন গোস্বামী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
ড. তাহেরের কন্যা সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ বাসসকে বলেন, এ মামলায় বিচার পেতে তাদের দীর্ঘ ধৈর্য্যরে মধ্য দিয়ে এ পর্যায়ে আসতে হয়েছে। এখন রায় কার্যকর দেখার অপেক্ষায়।
নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে গত সপ্তাহে রিট করেন তার পরিবারের সদস্যরা।
অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেয়া হয়েছে।
গত ৩ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ বিচারপতির বেঞ্চ ২১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেছেন।
গত ২ মার্চ এ মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত বছরের ৫ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদন্ড এবং অন্য দুই আসামির যাবজ্জীবন দন্ডও বহাল রাখেন আদালত। যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকা দুজন হলেন নাজমুল আলম ও আব্দুস সালাম। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন আসামিরা।
ড. তাহের হত্যা মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুতবিচার আদালত চারজনকে মৃত্যুদন্ড এবং দুইজনকে বেকসুর খালাস দেন। পরে আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল হাইকোর্ট দুই আসামির ফাঁসির দন্ড বহাল রাখেন এবং অন্য দুই আসামির দন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধেও আসামিরা আপিল করেন।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক ড. তাহেরের মরদেহ। এর দুই দিন পর ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।