কিয়েভ এবং মস্কোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে রাশিয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা শনিবার তার রুশ প্রতিপক্ষ ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মস্কোর সাথে আলোচনার প্রত্যাখ্যান করার একদিন পর রামাফোসা তার প্রতিনিধি দলের গৃহীত গুচ্ছ নীতি-প্রস্তাবনা পেশ করেছেন, যা ‘বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন বলে মনে করে ক্রেমলিন।
প্রতিনিধি দলটি এমন একটি মহাদেশের কণ্ঠস্বর নিয়ে এসেছিল যা ইউক্রেন সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায়, বিশেষ করে শস্যের দাম বৃদ্ধির কারণে খারাপ পরিস্থিতির মোকাবেলা করছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিল রামাফোসা সেন্ট পিটার্সবার্গের শহরতলীতে আলোচনার পর বলেছেন, ‘এই যুদ্ধ অবশ্যই আলোচনার মাধ্যমে এবং কূটনৈতিক উপায়ে নিষ্পত্তি করা উচিত।’
রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনে তাদের সামরিক অভিযানকে বর্ণনা করার জন্য ‘যুদ্ধ’ শব্দটিকে কার্যকরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
রামাফোসা বলেছেন, তার প্রতিনিধি দল ‘এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চান’। এই প্রতিনিধিদলে সাতটি আফ্রিকান দেশের নেতা এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন।
রামাফোসা ১০টি নীতি তালিকাভুক্ত করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে সংঘাত নিরসন, দেশের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি, সমস্ত দেশের জন্য নিরাপত্তা গ্যারান্টি, কৃষ্ণ সাগরের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন শস্য রপ্তানি এবং যুদ্ধবন্দী ও শিশুদের তাদের মূল দেশে ফেরত পাঠানো।
এই মিশনে দক্ষিণ আফ্রিকা, সেনেগাল, কমোরোস এবং জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি উগান্ডা, মিশর এবং কঙ্গো-ব্রাজাভিলের শীর্ষ কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
রাষ্ট্র-পরিচালিত সংস্থা আরআইএ নভোস্তি ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে পেসকভ বলেছেন, ‘যে কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন।’
নেতাদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরে পেসকভ বলেছেন, ‘তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন এটি বিবেচনা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।’
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, পরিকল্পনাটি ‘আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরি করা হয়নি।’
পুতিন প্রতিনিধিদলের ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ পন্থার প্রশংসা করে বলেছেন, ‘যারা ন্যায়বিচারের নীতির উপর ভিত্তি করে শান্তি বাস্তবায়ন করতে চায় এবং পক্ষগুলোর ন্যায় সংগত অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাদের সাথে গঠনমূলক আলোচনার পথ উন্মুক্ত।’
মস্কো অতীতের পুনরাবৃত্তি করে বলেছে, যে কোনও আলোচনার জন্য ‘নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা’ বিবেচনায় নেওয়া দরকার।
রামাফোসার সাথে কিয়েভে আলোচনায় যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানানোর পরে জেলেনস্কি শুক্রবার তার অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, শান্তি অর্জনের জন্য ইউক্রেনকে অবশ্যই রাশিয়ার কাছে হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে হবে।