প্রথম ম্যাচ বৃস্টিতে পন্ড হয়ে গেলেও পুনরায় সেই বাঁধা থাকবে না-এমন আশায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লিড নেয়ার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল কাউন্টি গ্রাউন্ড চেমসফোর্ডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ।
প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও ম্যাচে আধিপত্যে বিস্তার করে খেলেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান করে টাইগাররা। এই স্কোর সন্তোষজনক না হলেও বৃষ্টি খেলার বন্ধ হবার আগে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন ছিল বাংলাদেশের হাতে। ১৬ দশমিক ৩ ওভারে ৬৫ রানের বিনিময়ে আয়ারল্যান্ডের ৩ উইকেট শিকার করেছিলো টাইগাররা।
প্রশ্ন উঠেছে, বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকার পরও কেন স্পিনারদের দিয়ে দ্রুত ২০ ওভার পর্যন্ত বোলিং সম্পন্ন করেননি অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অন্তত ২০ ওভার খেলা হলে বৃষ্টি আইনে ম্যাচের ফল আসতে পারতো। বিশেষ করে প্রশ্ন উঠেছে, কেন সাকিব আল হাসানকে আক্রমণে আনা হয়নি।
প্রথম ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের ৬১ রানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। তার মতে, ব্যাটাররা আশানুরূপ ব্যাটিং করতে পারেননি।
শান্ত বলেন, ‘উইকেট ব্যাটিং সহায়ক ছিলো। এখানে ২৯০-৩০০ রান করা সম্ভব ছিল। কিন্তু মাঠে নামার আগে উইকেট সম্পর্কে আমাদের ধারনা ঠিক ছিলনা পরবর্তীতে আমাদের বোলাররা ভাল করতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বড় কোন জুটি গড়তে পারিনি। এটি বড় একটি বিষয় ছিলো। আমরা যদি একটি ভালো জুটি করতে পারতাম তাহলে ৩শর বেশি রান হতো।’
বাংলাদেশের মাত্র দু’টি হাফ-সেঞ্চুরির জুটি ছিলো। শান্ত এবং তৌহিদ হৃদয় ৫০ এবং মুশফিক এবং মেহেদি হাসান মিরাজ ৬৫ রানের জুটি গড়েন।
শান্ত বলেন, ‘টপ অর্ডার ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত আমরা ভালো শুরু করতে পারিনি। বড় জুটি গড়া আমাদের দায়িত্ব ছিলো। কিন্তু আমরা তা করতে ব্যর্থ হয়েছি। আশা করি, আমরা ভুল থেকে শিক্ষা নেব। পরের ম্যাচে পুরোপুরি খেলা হবে এবং আমরা লিড নিতে পারবো।’
পরিসংখ্যান বলছে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এগিয়ে আছে বাংলাদেশই। এখন পর্যন্ত ১৪টি ওয়ানডে খেলেছে দু’দল। ৯টিতে জয় ও ২টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ^কাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রিজটাউনে প্রথমবারের দেখায় বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পেয়েছিলো আয়ারল্যান্ড। ২০১০ সালে বেলফাস্টে শেষবার বাংলাদেশকে হারিয়েছিলো আইরিশরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে যতগুলো ম্যাচ খেলেছে কোনটিতেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি আয়ারল্যান্ড।
সম্প্রতি ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। ঐ সিরিজে বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙেছে টাইগাররা। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান করে বাংলাদেশ। যা নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রান টাইগারদের। ঐ ম্যাচে ৬০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের মধ্যে দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন মুশি।
ওয়ানডের পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে এবং একমাত্র টেস্টও জিতেছিলো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল : তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, ইয়াসির আলী, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
আয়ারল্যান্ড দল : অ্যান্ড্রু বলবির্নি (অধিনায়ক), মার্ক অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্পার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, স্টেফেন ডোহেনি, ফিওন হ্যান্ড, গ্রাহাম হুম, জশ লিটল, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, পল স্টার্লিং, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার ও ক্রেইগ ইয়ং।