জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান (মন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন), সাবেক সচিব এটিএম শামসুল হক (৮৮) বার্ধক্যজনিত রোগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহে…রাজেউন)।
তিনি স্ত্রী, তিন কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। কুমিল্লা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আতাউর রহমান জসিম বাসসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এটিএম শামসুল হক কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার শিমপুর গ্রাম জন্মগ্রহণ করেন। এটিএম শামসুল হকের কর্মজীবন শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স), আন্তর্জাতিক সম্পর্কে এমএ, এবং এলএলবি ডিগ্রি লাভ করার পর তিনি আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া ও যুক্তরাজ্যের কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যায়ন করেন। প্রাক্তন সিএসপি (সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান) এর সদস্য হিসেবে, এটিএম শামসুল হক বাংলাদেশ সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। তিনি আট বছর আন্ত:সরকারি প্রতিষ্ঠান এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমন্বিত পল্লী উন্নয়ন কেন্দ্র সিরডাপ-এর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এই ছাড়াও কেবিনেট মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তিন বছর বাংলাদেশ সরকারের পার্ক (পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফরম কমিশন) এর চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে কুমিল্লা সদর আসনে সংসদ সদস্য পদে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দুইবার প্রতিদ্বন্ধীতা করেন।
নিজ গ্রাম শিমপুরে তার বাবার নামে স্থাপন করেন আনসার আলী ভকেশনাল ট্রেনিং ইনন্সিটিউট। কুমিল্লা শহরের মুন্সেফ কোয়ার্টারে নিজেদের প্রায় ১২৫ শতক জায়গা দিয়ে দেন মায়ের নামে খায়রুননেছা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের জন্য, যা বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে।
এছাড়াও এই গুণীব্যক্তি, বিংশ শতাব্দীর শেষ ছয় দশকের পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক রেখাচিত্র সংবলিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ মোজাইক অব মেমোরিজ এবং সিলেক্টেড প্রভার্বস এন্ড কোটেশনস গ্রন্থের রচিয়তা।
ড. এটিএম শামসুল হকের ঘনিষ্ট সহচর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজী শারমিন আওয়াল পারভেজ বাপ্পী বাসসকে জানান, আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।