পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ভারত কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলবে না, তারা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন চায়।
শুক্রবার দিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে দেশে ফিরে আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকে পি কে হালদারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, পি কে হালদারের ব্যাপারে আমরা বলেছি। কিন্তু তারা বলেছে, এটা একটা সাবজুডিস (বিচারধীন)। তাদের এখনো এটার বিচার প্রক্রিয়া চলছে, সেজন্য জন্য আমাদের যে অনুরোধ, সেটা তাদের বিবেচনায় আছে। যেহেতু বিচারধীন তারা এটা নিয়ে বেশি আলোচনা করতে চায় না।
বৈঠকে ভারতে অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের দেশে ফেরানো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান পররাষ্ট্রসচিব।
শুক্রবার নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়। ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং দিল্লির পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা বৈঠকে নেতৃত্ব দেন। প্রায় আট মাসের বিরতিতে দ্বিতীয় মেয়াদে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক ছিল এটি।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পি কে হালদার ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকারও বেশি।
এসব অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন। এরপর তদন্ত করে পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
আলোচিত পি কে হালদার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মোট ৪৩টি মামলা দায়ের করেছে দুদক। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের অর্থ আত্মসাতে ২২টি মামলা ও এফএএস লিজিংয়ের অর্থ আত্মসাতে ১৩ মামলা হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সম্পদের মামলা রয়েছে। যার মধ্যে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে ২২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।