You are here
Home > প্রযুক্তি > টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশে শাওমি ব্র্যান্ড উদ্বোধন করেছেন

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশে শাওমি ব্র্যান্ড উদ্বোধন করেছেন

শাওমি মোবাইল ফোন এখন বাংলাদেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। স্যামসাংসহ বিশ্বের সেরা কয়েকটি ব্র্যান্ডের মোবাইল কারখানা স্থাপনের পর এবার শাওমি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ যাত্রা শুরু করলো। এ নিয়ে দেশে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনের ক্ষেত্রে আরও একটি অসাধারণ যাত্রা শুরু হলো। 
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর দপ্তর থেকে ভার্চূয়্যালি সংযুক্ত হয়ে শাওমি মোবাইল ফোনের বাংলাদেশে স্থাপিত কারখানায় উৎপাদিত ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের এই মোবাইলের উদ্বোধন করেন।
শাওমির বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়াউদ্দিনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশকে আমদানিকারক দেশ থেকে রপ্তানিকারী দেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ডিজিটাল ভিভাইস বিষয়ক টাস্কফোর্সের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ সহায়ক কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ফলে দেশে আইওটিসহ ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনের যাত্রা শুরু হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ বাস্তবায়নে আমরা যে যুদ্ধটি শুরু করেছি তা সফলতার দ্বারে কড়া নাড়ছে। আমাদের দেশে এখন ১৪টি মোবাইল ফ্যাক্টরি থেকে উৎপাদিত মোবাইল সেট দেশের মোট চাহিদার শতকরা ৬৫ ভাগের বেশি পুরণ করছে।’
চাহিদার শতকরা ৮০ ভাগ স্মার্টফোন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কারখানা থেকে উৎপাদিত ৫জি মোবাইল সেট আমেরিকায় যাচ্ছে। আমরা সৌদি আরবে আইওটি ডিভাইস রপ্তানি করছি। বিশ্বের ৮০টি দেশে বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার রপ্তানি হচ্ছে। আমরা সৌদি আরব ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করছি। অথচ এক সময় কাপড় কাঁচার সাবান থেকে প্রায় প্রতিটি পণ্য বিদেশ থেকে আমাদের আমদানি করতে হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, আজকের এই পরিবর্তন ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্বে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচিরই ফসল।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ দৃশ্যমান দেখছি। তিনি বলেন, সাবমেরিন ক্যাবল ও মহাকাশে স্যাটেলাইটসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন, দুর্গম চরাঞ্চল, হাওর ও দ্বীপ এবং পার্বত্য অঞ্চলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ এবং ফোরজি সার্ভিস পৌঁছে দেয়ায় দেশে শক্তিশালী ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। মন্ত্রী জানান, গত দুই বছর কোভিডকালে মানুষের জীবন যাত্রা, শিল্প-বাণিজ্য সচল রাখা হয়েছে। 
মোস্তাফা জব্বার এ সময় দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, শাওমির বাংলাদেশ কারখানায় উৎপাদিত মোবাইল সেট  কেবল দেশেই নয়, দেশের বাইরেও রপ্তানি হবে। 
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বিদ্যমান মোবাইল কারখানাগুলোতে শতকরা ৯৯ ভাগ কর্মী আমাদের এ দেশের সন্তান। তারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোবাইল উৎপাদন কারখানায় কাজ  করছে।’
দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের স্বার্থে এখাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সরকারের গৃহীত প্রযুক্তি বান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সরকারের গৃহীত বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশের পাশাপাশি আমাদের মেধাবি জনসম্পদ বিশ্ব সেরা ব্র্যান্ডের মোবাইল উৎপাদন কারখানা স্থাপনেও বিনিয়োগকারিদের আকৃষ্ট করেছে।’
মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের জন্য শাওমি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান এবং সম্ভাব্য সব ধরণের সহযোগিতা প্রদানেরও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্পখাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমান বলেন, ‘তরুণ নেতৃত্ব ও শাওমির মতো নতুন প্রজন্মের কোম্পানির ওপর আমাদের যথেষ্ট বিশ্বাস রয়েছে। এমন নতুন প্রজন্মের সব কোম্পানি ও উদ্যোক্তাই হচ্ছে বাংলাদেশের একেকটা সফলতা। ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে শাওমির প্রথম উৎপাদন ইউনিট স্থাপনে আমরা অংশীদার হতে পেরে অনেক আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে দেশের তরুণদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক মানের ইলেক্ট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা হবে। বাংলাদেশে এমন সূর্যোদয়ের জন্য শাওমিকে স্বাগতম।’
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদন কারখানা চালুর জন্য শাওমিকে অভিনন্দন। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো। 
প্রতিমন্ত্রী বলেন,এখন থেকে দেশের মানুষ প্রতিযোগিতামূলক দামে বিশ্বমানের শাওমির সর্বশেষ সব উদ্ভাবনী পণ্য উপভোগ করবে।

Similar Articles

Leave a Reply

Top