মিয়ানমারের সামরিক সরকার দেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাধারণ ক্ষমার অধীনে মিয়ানমারের জান্তা ৭ হাজার ১২ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে। তবে এরমধ্যে রাজনৈতিক বন্দী থাকবে কিনা তা জানা যায়নি। বুধবার একজন সরকারী মুখপাত্রের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এমআরটিভি।
প্রায় দুই বছর আগে নোবেল বিজয়ী অং সাং সুচির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা এবং নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি তার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছে।
ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের দিনটিতে প্রতিবছরই সাধারণ ক্ষমার অধীনে কিছু বন্দিকে মুক্তি দেয় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
এমআরটিভি বলেছে, সর্বশেষ সাধারণ ক্ষমায় হত্যা ও ধর্ষণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়া বা বিস্ফোরক, বেআইনি মেলামেশা, অস্ত্র, মাদক, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে দণ্ডিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। এছাড়াও কোন রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।
এদিকে রাজধানী নেপিদোতে বুধবারের স্বাধীনতা দিবসের একটি কুচকাওয়াজে বক্তৃতায় সামরিক শাসক জেনারেল মিন অং হ্লাইং মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করেন এবং চীন, ভারত, থাইল্যান্ড, লাওস এবং বাংলাদেশকে ইতিবাচকভাবে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
মিন অং হ্লাইং বলেন, আমরা চীন, ভারত, থাইল্যান্ড, লাওস এবং বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। আমরা সীমান্তে স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করব।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির বেসামরিক সরকার পতনের পর থেকে মিয়ানমার বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর মতে, ভিন্নমত দূর করার জন্য সামরিক জান্তার অভিযানের অংশ হিসেবে প্রায় ২ হাজার ২৮০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং ১১ হাজার ৬৩৭ জন এখনও আটক রয়েছে।
এদিকে, মিয়ানমারের একটি জান্তা আদালত গত শুক্রবার দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সুচির বিরুদ্ধে ১৮ মাসব্যাপী চলা বিচারের চূড়ান্ত রায় দিয়েছে। সুচিকে দুর্নীতির পাঁচটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তাকে সম্মিলিত সাত বছরের জন্য কারাদণ্ড দিয়েছে।
মামলা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ১২ মাসে দুর্নীতি থেকে শুরু করে অবৈধভাবে ওয়াকি-টকি রাখা এবং কোভিড বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করা জন্য তাকে ১৪টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং অন্তত ২৬ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। শুক্রবারের রায়ের পর মোট ৩৩ বছরের সাজা হল এই নোবেল বিজয়ীর।