জাতিসংঘ এবং এর অংশীদার সংস্থাগুলো ২০২৩ সালের জন্য রেকর্ড ৫১.৫ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ১৫০ কোটি ডলারের সাহায্যের অর্থের জন্য একটি আবেদন শুরু করেছে। কয়েক কোটি অতিরিক্ত মানুষের মানবিক সহায়তায় এই অর্থ প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিভাগ অনুমান করছে, আগামী বছর সাড়ে ৬ কোটি অতিরিক্ত সাহায্য প্রার্থীসহ ৬৮টি দেশে প্রায় ৩৪ কোটি জনসংখ্যার সাহয্যের প্রয়োজন হবে।
জাতিসংঘের জরুরী ত্রাণ সমন্বয়কারী মার্টিন গ্রিফিথস বৃহস্পতিবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি অভূতপূর্ব এবং একটি হতাশাজনক সংখ্যা। এর অর্থ আগামী বছরটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক কর্মসূচি হতে যাচ্ছে।
গ্রিফিথস বলেন, সারা বিশ্বে মানবিক চাহিদা খুবই চমকপ্রদ হারে বাড়ছে, যা ২০২৩ সালেও অব্যহত থাকবে। এর কারণ হিসেবে ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং আফ্রিকার খরার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘ ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে, আধুনিক ইতিহাসের বৃহত্তম বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবেলা করছে বিশ্ব। এছাড়াও ১০ কোটিরও বেশি মানুষ সংঘাত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
জাতিসংঘ উল্লেখ করেছে যে ৫৩টি দেশে কমপক্ষে প্রায় ২২ কোটি মানুষ এই বছরের শেষ নাগাদ তীব্র খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হবে বলে আশা করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে সাড়ে ৪ কোটি অনাহারের ঝুঁকির মুখোমুখি। পাঁচটি দেশ ইতিমধ্যেই আমরা দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং এর ফলে মানুষ মারা যাচ্ছে।
সেই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে – আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, হাইতি, সোমালিয়া এবং দক্ষিণ সুদান – এই বছর তাদের জনসংখ্যার কিছু অংশ বিপর্যয়কর ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে, কিন্তু এখনও দেশব্যাপী দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেনি।
এছাড়াও রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে নয় মাস যুদ্ধের ফলে খাদ্য রপ্তানি ব্যাহত হয়েছে এবং ৩৭টি দেশের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ বর্তমানে অনাহারে ভুগছে। গত বছরের তুলনায় এই বছরের আবেদন ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির পেয়েছে। এদিকে, একাধিক সংকটের কারণে দাতাদের অর্থায়ন ইতিমধ্যেই ব্যপক হারে কমেছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেটার উপর ভিত্তি করে ২০২২ সালে সাহায্যের আবেদনের প্রায় ৫৩ শতাংশ তহবিল পায়নি জাতিসংঘ। এই পরিস্থিতিতে আগামী বছরের জন্য এই বিশাল তহবিল যোগার করা চ্যালেঞ্জিং হবে