ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়া শনিবার নতুন করে ব্যাপক আকারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে। ইউক্রেনের দীর্ঘদিনের দাবি পূরনে ব্রিটেন প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে তাদের ভারী ট্যাঙ্ক সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে।
ব্রিটিশ পদক্ষেপে মস্কো দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সতর্ক করেছিল যে এটি সংঘাতকে ‘তীব্রতর’ করবে।
এদিকে মোলদাভা বলেছে, সর্বশেষ রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ তার ভূখন্ডে আছড়ে পড়েছে, তারা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে।
দীর্ঘ যুদ্ধের পরে বিধ্বস্ত সোলেদার শহরটি দখল করার রাশিয়ার দাবির একদিন পরে ইউক্রেন শনিবারও জোর দিয়ে বলেছে, সোলেদারে লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
ধারাবাহিক সামরিক বিপর্যয়ের পর সোলেদার বিজয় হবে মস্কোর জন্য একটি বিরল অর্জন।
ইউক্রেনের একটি জনপ্রিয় ছুটির দিন ওল্ড নিউ ইয়ার উদযাপনের দিনে দেশ জুড়ে মারাত্মক রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সর্বশেষ তরঙ্গের নিন্দা করেছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।
ডিনিপ্রোপেট্রোভস্কের গভর্নর ভ্যালেন্টিন রেজনিচেঙ্কো মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডিনিপ্রোতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলে ১৫ বছর বয়সী এক মেয়েসহ অন্তত ১৪ জন নিহত এবং ৬৪ জন আহত হয়।
তিনি আরো বলেন, আহতদের মধ্যে সাত শিশু রয়েছে, যাদের বয়স সবচেয়ে কম তিন বছরের।
ধ্বংসস্তুপ থেকে এ পর্যন্ত ৩৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং অনুসন্ধান অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবা বলেছে, ডিনিপ্রোর একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে পড়া এক মহিলাকে তার কণ্ঠস্বর শোনার পর উদ্ধারকারীরা রাতভর কাজ করে তাকে উদ্ধার করেছে।
প্রেসিডেন্সির ডেপুটি হেড কিরিলো টিমোশেঙ্কো বলেছেন, ডিনিপ্রো অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কয়েক ডজন ফ্ল্যাট ধ্বংস করেছে, ১০০ থেকে ২০০ লোক গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং প্রায় ১,৭০০ জন বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়েছে ।
এর আগে শনিবার, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইউক্রেনকে চ্যালেঞ্জার ২ ট্যাঙ্ক সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভারী ট্যাঙ্ক সরবরাহ করার জন্য কিয়েভের জোর দাবির পর প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে ব্রিটেন এই ঘোষণা দিয়েছে।
ট্যাঙ্কগুলো আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনে পৌঁছাবে, সুনাকের ডাউনিং স্ট্রিট অফিস পরবর্তী বিবৃতিতে বলেছে, ব্রিটেনও ট্যাঙ্ক এবং বন্দুক ব্যবহার করার জন্য ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করবে।
যুক্তরাজ্যে রাশিয়ার দূতাবাস দ্রুত একটি সতর্কতা জারি করে বলেছে, ‘বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে ট্যাংক নিয়ে আসায় কেবলমাত্র যুদ্ধ অভিযানকে তীব্রতর করতে কাজ করবে, বেসামরিক জনসংখ্যাসহ আরও বেশি হতাহতের কারণ হবে।
তবে শনিবার তার সন্ধ্যার ভাষণে জেলেনস্কি যুক্তি দিয়েছিলেন যে রাশিয়ান ‘সন্ত্রাস’ কেবল যুদ্ধক্ষেত্রেই থামানো যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জমিতে, আমাদের আকাশে, আমাদের সমুদ্রে করা যেতে পারে এবং করা উচিত।’
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিবেশী মোলদাভা শনিবার বলেছে, সর্বশেষ রুশ হামলার পর তারা তার ভূখন্ডে ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে।
ধ্বংসাবশেষের ছবি পোস্ট করে প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু টুইট করেছেন, ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার নৃশংস যুদ্ধ সরাসরি মোলদাভাকে প্রভাবিত করেছে। আমরা আজকের হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।