ভারতের উত্তরপ্রদেশে ‘হালাল’ লেখাযুক্ত পণ্য নিষিদ্ধ করার পর এবার ‘হালাল’ লেখাযুক্ত পণ্য বিক্রি বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিহার। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) ভারতের কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিং ‘হালাল সার্টিফায়েড’ লেখা পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে।
এছাড়া হালাল লেখাযুক্ত পণ্য বিক্রি বন্ধের দাবি উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, গুজরাট, মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থানেও।
ভারতে খাদ্য পণ্যের ওপর হালাল ট্যাগ বিতর্ক দীর্ঘদিনের। সরকারিভাবে হালাল খাদ্য বা পণ্যের স্বীকৃতি নেই। ভারতে খাদ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে স্বীকৃতি বা সার্টিফিকেট দেওয়ার অধিকারী সংস্থাটি হল এফএসএসএআই বা ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্থরিটি অফ ইন্ডিয়া। যদিও হালাল ইন্ডিয়া নামে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বেসরকারিভাবে ’হালাল’ সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে।
সম্প্রতি লখনউয়ের হজরতগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া একটি এফআইআরকে হাতিয়ার করে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার নড়েচড়ে বসে। থানায় অভিযোগ করা হয়, বেশ কিছু খাদ্যপণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে যেগুলিতে হালাল সার্টিফিকেটের উল্লেখ রয়েছে। এইভাবে মানুষের বিশ্বাসকে পণ্য বিক্রির উদ্দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাস্তবে হালাল সার্টিফিকেটের কোনও সরকারি স্বীকৃতি নেই।
বৃহস্পতিবার নীতিশ কুমারকে লেখা ওই চিঠিতে বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং জানিয়েছেন, বেসরকারিভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইস্যু করা “হালাল” প্রশংসাপত্র বেআইনি। তাই হালাল লেখা পণ্য বিক্রি বন্ধ করুন।
তবে গিরিরাজের চিঠির প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকার এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। জনতাদল ইউনাইটেডের এক নেতার কথায়, গিরিরাজ সিং ভোটারের মেরুকরণের অঙ্ক মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। হালাল সার্টিফায়েড অনুমোদিত পণ্য মানুষ কিনবে কী কিনবে না সেটা ক্রেতার ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়।
ইসলামিক রীতিতে জীবনযাপনে পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে হালাল কথাটির বহুল ব্যবহার থাকলেও শব্দটির মূল অর্থ যা ধর্মীয় বিধান সম্মত।হালাল একটি আরবি শব্দ। এর বিপরীত শব্দটি হল হারাম অর্থাৎ যা গ্রহণযোগ্য নয়, মন্দ, অশুভ, আল্লাহর অপছন্দ। ইসলামিক রীতিতে অ্যালকোহল বর্জিত পণ্যকে হালাল পণ্য হিসেবে মান্যতা দেওয়া হয়।
তাই বৈশ্বিক খাদ্য পণ্যের বাজারে ব্যবহৃত পণ্যের গায়ে হালাল লেখার চল আছে। বিশেষ করে মুসলিমদের বাস বেশি এমন দেশের সব এলাকার দোকান, বাজারে হালাল লেখা পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে। বিষয়টি নিয়ে এতদিন ভারতে বিরোধিতা না থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে এই রীতি ভাঙতে চাইতে দেশটির উগ্রবাদীরা।