ইউক্রেন শুক্রবার বলেছে, রাশিয়া নতুন করে বড় ধরণের বিমান হামলা শুরু করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের এক বছরকে কেন্দ্র করে কিয়েভের প্রতিবেশী পোল্যান্ড সফরের ঘোষণার মধ্যে রাশিয়া এই হামলা শুরু করেছে।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দূরপাল্লার অস্ত্র ও যুদ্ধ বিমানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের কাছে তদবির করতে ব্রাসেলসে যাওয়ার একদিন পর খারকিভের পূর্বাঞ্চল থেকে ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্কের পশ্চিমাঞ্চলে হামলার খবর পাওয়া গেছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের দিকে যাওয়ার সময় সাবেক সোভিয়েত মলদোভা এবং ন্যাটো সদস্য রোমানিয়ার উপর দিয়ে আকাশপথ অতিক্রম করেছে, যদিও বুখারেস্ট এই দাবি অস্বীকার করেছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি রক্তাক্ত সংঘাতের এক বছরের বার্ষিকীর কাছাকাছি আসার সাথে সাথে, হোয়াইট হাউস বলেছে, বাইডেন ২০ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ন্যাটো মিত্র পোল্যান্ডে যাবেন।
হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার নৃশংস এবং অপ্রীতিকর আক্রমণকে চিহ্নিত করার জন্য বাইডেন একটি বক্তৃতা দেবেন, যেভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জনগণকে তাদের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় সমর্থন করার জন্য বিশ্বকে একত্রিত করেছে।’
শুক্রবার ক্রেমলিন ঘোষণা করেছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ২১ ফেব্রুয়ারি তার বার্ষিক রাষ্ট্রীয় ভাষণ দেবেন।
পশ্চিমা মিত্ররা কিয়েভে ভারী ট্যাঙ্ক সরবরাহ করতে সম্মত হওয়ার কয়েকদিন পর, জানুয়ারির শেষের দিকে রাশিয়া সর্বশেষ ইউক্রেনকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল।
জেলেনস্কি রাশিয়ান নতুন হামলাকে ‘ন্যাটোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, ‘এটি সন্ত্রাস যা বন্ধ করা যেতে পারে এবং অবশ্যই বন্ধ করা উচিত।’
রোমানিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় বলেছে, তারা ‘ কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ান ফেডারেশনের একটি জাহাজ থেকে উৎক্ষেপিত একটি আকাশ লক্ষ্যবস্তু সনাক্ত করেছে’। তবে ‘কোনো সময়েই এটি রোমানিয়ার আকাশসীমার সাথে ছেদ করেনি’।
মলডোভান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র তার আকাশসীমা অতিক্রম করেছে, তারা রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করবে।
রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে পশ্চিমাপন্থী দেশটিকে হামলা করায় শুক্রবার কিয়েভের বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে এসেছে।
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল বলেছেন, ‘রুশ সন্ত্রাসীরা আজ আবারও ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।’
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী বলেছে, রাশিয়ানরা শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, আজভ সাগর থেকে ইরানের তৈরি বিস্ফোরক ড্রোনগুলো এবং কৃষ্ণ সাগর থেকে কালিব্রা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
বিমান বাহিনী বলেছে, রাশিয়া খারকিভের পূর্বাঞ্চল এবং জাপোরিঝিয়ার দক্ষিণাঞ্চল লক্ষ্য করে ৩৫টি এন্ট্রি এয়ারক্রাফট গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, কিয়েভ লক্ষ্য করে চালানো হামলায় দশটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে।
স্থল অভিযানে অপমানজনক পরাজয়ের পরে, রাশিয়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যার ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিয়েছে যা লক্ষ লক্ষ মানুষকে তীব্র ঠান্ডা এবং অন্ধকারের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।