ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকসহ দেশের সব গণমাধ্যমের কাছে ক্ষমা চাইলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা।
আজ শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম ও সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসানকে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিশা। তারপর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি।
এ সময় অপ্রত্যাশিত এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
তিশা বলেন, ‘আপনাদের সকলের ভালোবাসা ও সহযোগিতায় অভিনয়শিল্পী তানজিন তিশা। আমি কয়েকদিন আগে হাসপাতালে অসুস্থ ছিলাম। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পর দেখলাম, দুয়েকটি নিউজপোর্টাল আমার আত্মহত্যা চেষ্টা শিরোনামের নিউজ করেছে। এমন সময় সাংবাদিক তামিম (যার সঙ্গে আমার কোনো পূর্বপরিচয় নেই) সে আমাকে একটা টেক্সট করে, যেটা ওই সময়ের জন্য আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়নি। আমি ভাবতেই পারিনি, এই সময়ে কেউ আমাকে এমন একটি টেক্সট করবে বা একজন নারীকে কেউ এমন প্রশ্ন করতে পারে। আমি সহ্য করতে না পেরে তাকে জানাই, টেক্সেটের বিষয়ে নিউজ করলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেব।’
তিনি বলেন, ‘তার সঙ্গে ফোনে যেসব শব্দ উচ্চারণ করেছি, আমি জানি তা সঠিক নয়। সেটার জন্য আমি দুঃখপ্রকাশ করেছি, এখনো করছি। এর মধ্যে আমার সঙ্গে কথা বলার কলরেকর্ড অনুমতি ছাড়া প্রচার করা হয়েছে। তা শুনে অন্যান্য সাংবাদিকরা রেগে যায়, যা খুবই যৌক্তিক। তবে আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়ে অনেকে অসত্য, মনগড়া সংবাদ ও লেখা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন। সেসব দেখে আমি রেগে যাই। তারপর আমি ডিবিতে অভিযোগ করতে আসি। সেখানেও গণমাধ্যমের সামনে তামিম ও প্রতিষ্ঠানের নাম নিয়ে ফেলি। যেটা আমি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিইনি। সে জন্য প্রতিষ্ঠানটির কাছে আমি দুঃখপ্রকাশ করছি। একজনকে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চলে না।’
তামিমের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি পুলিশের কাছে যে অভিযোগ করেছিলাম, সেটাও তুলে নিচ্ছি। তবে যারা আমার এবং আমার পরিবারকে ঘিরে অসত্য-অসম্মানজনক নিউজ প্রকাশ করেছে, তারা অনুতপ্ত হবে। সেইসঙ্গে লেখাগুলো সরিয়ে নেবেন, সেটাও আমি প্রত্যাশা করি। কারণ এটা একজন শিল্পী বা নারীর জন্য অসম্মানজনক।’
এ সময় তিনি অপসাংবাদিকতা রুখতে মূলধারার সাংবাদিকদের সাহায্য চেয়েছেন। যেন পরে তার মতো কাউকে এমন পরিস্থিতে পড়তে না হয়। প্রসঙ্গত, মূল ঘটনার সূত্রপাত হয় তানজিন তিশার ‘আত্মহত্যাচেষ্টা’র খবর প্রকাশের মধ্য দিয়ে। ১৫ নভেম্বর মধ্যরাতে অচেতন তিশাকে তার বোন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর এই খবরটি গণমাধ্যমে চলে আসে। মূলত এরপরই তানজিন তিশা ঘটনাটিকে নানাভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
সবশেষ ২০ নভেম্বর ডিবি অফিসে গিয়ে সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম তামিমের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ তোলেন তিশা। এর আগে তিশা সাংবাদিকদের ‘উড়িয়ে’ দেওয়ার হুমকি দেন, আবার সোশ্যাল হ্যান্ডেলে এর জন্য ক্ষমাও প্রার্থনা করেন।
পরে তানজিন তিশার অপেশাদার বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ২১ নভেম্বর এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বিনোদন সাংবাদিকরা। সেখান থেকে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল।