ক্রিকেটার আল-আমিন হোসেন স্ত্রী ইসরাত জাহানকে তালাক দিয়েছেন ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বৈবাহিক সম্পর্কের তিক্ততা ও অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে গত ২৫ আগস্ট তিনি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার আল আমিনের আদালতে দেয়া লিখিত জবানবন্দিতে তালাকের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে তার স্ত্রী তালাকের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
আজ ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে তিনি উপস্থিত হন। এরপর মামলার বিষয়ে ৭ পাতার একটি লিখিত জবাব দাখিল করেন ক্রিকেটার আল আমিন। এ বিষয়ে পাঁচ দিন পর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে বাদির আইনজীবী শামসুজ্জামান জানান।
তিনি বলেন , আসামি আল আমিন আদালতে উপস্থিত হয়ে হাজিরা দেন। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে লিখিত জবাব দাখিল করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, তিনি গত ২৫ আগস্ট তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। তবে তার স্ত্রী এখনো তালাক সংক্রন্ত কোন কাগজ পাননি।
আল আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান বলেন,‘আমি তালাকের বিষয়ে কিছুই জানিনা। কোন কাগজও পাইনি। আমি আদালতের কাছে ন্যায় বিচার চাই।’
লিখিত জবাবে ক্রিকেটার আল আমিন উল্লেখ করেন,গত ২৫ আগস্ট তিনি স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। তিনি তাকে দেনমোহর ও ভরণ পোষণ দিতে প্রস্তুত আছেন। তার দু’সন্তান তার নিজের বাসায় থাকেন ও তাদের পড়ালেখার খরচও তিনি বহন করবেন।
এরআগে ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে ক্রিকেটার আল আমিন আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় ৬ অক্টোবর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
তারও আগে ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে মামলাটি করেন আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আল-আমিনকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
মামলায় বলা হয়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ইসরাত জাহান ও আল-আমিন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দু’টি পুত্রসন্তান রয়েছে। বড় ছেলে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ইংরেজি ভার্সনে কেজিতে পড়াশোনা করছে। বেশ কিছুদিন ধরে আল-আমিন তার স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ-পোষণ দেন না এবং খোঁজ না রেখে এড়িয়ে চলেন। যোগাযোগও বন্ধ করে দিয়েছেন। আল-আমিন স্ত্রী-সন্তানদের বাসা থেকে বের করে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে জানান। দু’বছর ধরে আসামি বাদির খোঁজখবর নেন না এবং বাসায় নিয়মিত থাকেন না। যার কারণে ইসরাত তার দু’ সন্তানসহ বসতবাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকারসহ মাসিক ভরণ-পোষণ দাবি করে মামলাটি করেন। জীবনধারণের জন্য ৪০ হাজার, দু’সন্তানের ভরণ-পোষণ ও ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়াবাবদ মাসে ৬০ হাজার টাকা আল-আমিনের কাছে পাওয়ার হকদার বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
এরআগে গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আল-আমিন বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ইসরাত জাহান টাকা দিতে অস্বীকার করলে আল-আমিন তাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুসিসহ লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। সংসার করবেন না বলে জানান। ইসরাত জাহান ৯৯৯-এ টেলিফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ইসরাত জাহান। এ ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলাও হয়।