চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকা-ের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন রয়েছেন। বাকি ৩৭ জন সাধারণের মধ্যে ১৪ জনের পরিচয় মিললেও ২৩ জনের স্বজনদের খোঁজ মেলেনি এখনো। অগ্নিদগ্ধে গুরুতর আহত ১২জনকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
রোববার বিকেলে অগ্নিকা-ের ঘটনার আপডেট দেয়া হালনাগাদ বোর্ডে এই তথ্য জানায় সীতাকু- উপজেলা প্রশাসন। বিএম কন্টেইনার ডিপোতে থেমে থেমে এখনো আগুন জ্বলছে কন্টেইনারগুলোতে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ১টি কোম্পানী যোগ দিয়েছে।
এদিকে নিহত অন্যান্যদের মধ্যে কয়েকজনের পরিবার-স্বজনরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এখনো আসেননি। আবার শরীরের অধিকাংশ পুড়ে যাওয়ায় অনেক মরদেহ শনাক্ত করার মতো অবস্থায় নেই। ফলে এখনো ২৩ জনের পরিচয় মেলেনি বলে চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালকুদার রোববার (৫ জুন) বিকেলে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, নিহতদের মরদেহ চমেক হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৮ জন ফায়ার ফাইটার রয়েছেন। আগুন নেভানোর সময় বিস্ফোরণে প্রাণ গেছে তাদের। দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে দুই শতাধিক মানুষ ভর্তি রয়েছেন।
যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন- কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের কর্মী মনিরুজ্জামান, ভোলার দক্ষিণ বালিয়ারার হাবিবুর রহমান, বাঁশখালীর রবিউল আলম, মুমিনুল হক, মহিউদ্দিন, তোফায়েল আহমেদ, নোয়াখালীর চাটখিলের আলাউদ্দিন, মো. সুমন, যশোরের ইব্রাহীম হোসেন, রানা মিয়া, নিপুন চাকমা, শাকিল, আফজাল হোসেন ও নয়ন।
এদিকে বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ ১২ জনকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুরের পর ঢাকা থেকে আসা দুটি হেলিকপ্টার চট্টগ্রাম নগরের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে তাদের নিয়ে ঢাকায় রওনা হন। ঢাকায় নেওয়াদের মধ্যে অগ্নিদগ্ধে গুরুতর আহত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে একজন, পার্কভিউ হাসপাতাল থেকে একজন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ১০ জন রয়েছেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন জানান, অগ্নিকা-ের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখন ৪৫ জন দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ২০০ জনের মতো। ঘটনাস্থলে যৌথভাবে কাজ করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সীতাকু- উপজেলা প্রশাসন, র্যাব, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি ও স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকু-ের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।