চাঞ্চল্যকর মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ২৩ আগস্ট, সোমবার শুরু হয়েছে।
প্রথম দিনে মামলার বাদী ও নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট ফরিদুল আলম, অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোজাফফর আহমদ, এপিপি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। প্রসিকিউসন পক্ষ বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এর সাক্ষ্য গ্রহণ করার পর ১২ জন আসামীর পক্ষে আইনজীবীরা তাঁকে জেরা করেন।
সাক্ষ্য প্রদান শেষে আদালত প্রাঙ্গণে মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি স্বাক্ষ্য দিয়েছি আদালতে। বিভিন্ন আসামীর আইনজীবীরা আমাকে জেরা করেছেন এবং এটি চলমান রয়েছে। আগামীকালও এটি চলবে। আমি বিজ্ঞ আদালতের কাছে প্রার্থনা করেছি, চার্জশীটে অন্তর্ভুক্ত যে ১৫ জন আসামী রয়েছে, সবাই যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পাই।’
আসামী প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর আইনজীবী এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত সাংবাদিকদের বলেছেন, আদালতের নির্দেশনা মতে আমরা আগামী কার্যদিবসে বাদীর জেরা সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি নেব।
আদালতের সমন পেয়ে বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস সহ ৫জন স্বাক্ষী সাক্ষ্য দেয়ার জন্য সোমবার সকালে আদালতে হাজির হন।
সাক্ষ্য গ্রহণকালে মামলার ১৫ জন আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে কড়া নিরাপত্তায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে ১৫ জন আসামীকে সকালে আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতে সোমবার শুরু হওয়া সাক্ষ্য গ্রহণ একটানা আরো ২ দিন ২৪ ও ২৫ আগস্ট, যথাক্রমে মঙ্গলবার ও বুধবারও চলবে। মামলাটির চার্জসীটভুক্ত প্রথম ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালত থেকে সমন দেওয়া হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার নুরুল কবির। প্রতিদিন ৫ জন করে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করার কথা রয়েছে।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) সন্তোষ বড়ুয়া জানান, জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল গত ২৭ জুন মামলাটির চার্জ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলেন। তিনি আরো জানান, এ মামলায় ৮৩ জন চার্জসীট ভুক্ত সাক্ষী রয়েছেন। চলতি বছরের ২৭ জুন সকল আসামীর উপস্থিতিতে মামলাটির চার্জ গঠন করা হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টের এক পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। হত্যার পাঁচদিনের মাথায় ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় কারাগারে থাকা ১৫ আসামি হলো- বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, তাঁর দেহরক্ষী হিসাবে পরিচিত কন্সটেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।