রাজধানীর কদমতলী থানার মুরাদপুরের হাইস্কুল রোডের একটি বাসা থেকে মধ্যবয়সী এক দম্পতি ও তাদের মেয়ের লাশ উদ্ধার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার ওই দম্পতির বড় মেয়ে মেহজাবিন মুনকে ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক জাকির হোসাইন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস আদালতে আসামিকে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত শুনানী শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মন্জুর করেন।
গত শনিবার ১৯ জুন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কদমতলী থানার মুরাদপুরের হাইস্কুল রোডের একটি বাসা থেকে মধ্যবয়সী এক দম্পতি ও তাদের মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- মাসুদ রানা (৪৫), তার স্ত্রী জোসনা ওরফে মৌসুমী (৪০) এবং তাদের কন্যা সন্তান জান্নাত (১৮)।ওই ঘটনায় নিহতদের বড় মেয়ে মেহেজাবিন মুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মেহজাবিন পুলিশকে জানান, পারিবারিক কলহের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড। পরিবারের সদস্যদের প্রতি প্রচণ্ড ক্ষোভ ছিল তার। বিশেষ করে বোন জান্নাতুলের সঙ্গে মেহজাবিনের স্বামী শফিকুলের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে তার সন্দেহ ছিল। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল তার। এ বিষয়টি মা বাবাকে বলার পরও কোনো বিচার করেনি এবং লাভ হয়নি। উল্টো মায়ের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়েছে মা বোন জান্নাতের পক্ষ নিয়েছেন।
গত ২০ জুন মেহজাবিন ইসলাম ও তার স্বামী শফিকুল ইসলামকে আসামি করে কদমতলী থানার হত্যা মামলা করেন ভিকটিম মাসুদ রানার ভাই সাখাওয়াত হোসেন।
আটক হওয়ার আগে মেহজাবিন জরুরি সেবার হটলাইন ‘৯৯৯’-এ কল করে স্বামী ও মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে গত শনিবার সকালে পুলিশ গিয়ে ওই বাসা থেকে অসুস্থ অবস্থায় মেহজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম ও তার প্রথম স্বামীর ঘরের ছয় বছর বয়সী মেয়ে মারজান তাবাসসুম তৃপ্তিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে।
শুক্রবার রাতে খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মা-বাবা ও বোনকে অচেতন করে হত্যা করেন মেহজাবিন। সকাল ৮টার দিকে ৯৯৯-এ ফোন করে তিনি বলেন, ‘তিনজনকে মেরে ফেলেছি। দ্রুত পুলিশ না এলে স্বামী-সন্তানকেও মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়’।