নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলার উপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জিনিসের দাম যাতে সহনীয় থাকে, সেজন্য আজকে যেসব আইটেমের ওপর ভ্যাট ছিল সেগুলো তুলে নিয়েছি। সরকার থেকে যে পরিমাণ সহযোগিতা করা দরকার সেটা করা হচ্ছে। ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলায় ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
অর্থমন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে উপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘নিজস্ব উৎপাদন কম হলে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার যে জিনিসগুলো আমদানি করি, যেগুলো আমাদের হাতের বাইরে, সেগুলো অনেক প্যারামিটারের কারণে দাম বেড়ে যায়। তখনও ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
তিনি বলেন, এখন যুদ্ধ যেটা হচ্ছে, সেটাও মূল্য বৃদ্ধির একটা কারণ। এলসি প্রাইস, পরিবহন খরচ- এগুলো বেড়ে যায়। যারা আমদানি করেন তারাও সুযোগটা নেওয়ার চেষ্টা করেন, সে কারণে আরও বেশি দাম বাড়ে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ভ্যাট-শূল্ক প্রত্যাহারের পাশাপাশি সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবিকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন,‘এবার যে উদ্যোগটা নেওয়া হচ্ছে, সেটা হল টিসিবিকে শক্তিশালী করা। বাজারে সিন্ডিকেটের কাছে যদি কোনো মালামাল থেকে থাকে, দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে তারা সেই সুযোগ পাবে না টিসিবির মাধ্যমে বাজারে সঠিকভাবে বিতরণ করা গেলে।’
তিনি আরও জানান, সারা দেশের এক কোটি পরিবারে টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে নিত্যপণ্য সরবরাহ করা হবে।
এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্য তেলের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে চিঠি দিয়েছিল এনবিআরকে। এদিকে, রোজাকে সামনে রেখে চিনির দাম স্থিতিশীল রাখতে নিয়ন্ত্রণমূলক আমদানি শুল্কে ১০ শতাংশ ছাড় অব্যাহত রাখার ঘোষণা এসেছিল গত ৬ ফেব্রুয়ারি।
এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানায়, নিত্যপণ্যের শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনও প্রজ্ঞাপন হয়নি। এনবিআর থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সরকারি অনুমোদন প্রক্রিয়াশেষে খুব দ্রুত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
একজন আমদানিকারক জানান ভোজ্যতেলে বর্তমানে তেল আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ, উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং বিক্রয় পর্যায় ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে।
চিনিতে সর্বমোট ৬৫ শতাংশ ভ্যাট বা শূল্ক রয়েছে। এর মধ্যে স্পেসেফিক ডিউটি প্রতি টনে তিন হাজার টাকা। রেগুলেটরি ডিউটি ২০ শতাংশ যা কয়েক মাস আগেও ৩০ শতাংশ ছিল। এআইটি বা এডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স রয়েছে ২ শতাংশ। আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে।