আগারগাঁওয়ে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকেল সাড়ে চার টার দিকে সানজানাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।রাজধানীর দক্ষিণখানে ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সানজানা মোসাদ্দিকার (২১) আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার রাতে শিক্ষার্থী সানজানার মা উম্মে সালমা বাদি হয়ে শাহীন আলমের (বাদির স্বামী) বিরুদ্ধে দক্ষিনখান থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকে মামলার আসামি সানজানার পিতা শাহীন আলম (৪৮) পলাতক রয়েছেন।
আজ সোমবার দক্ষিণখান থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুল হক মিয়া জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে সানজানার মা উম্মেসালমা ওরফে মণি বাদি হয়ে গতকাল রোববার রাতে থানায় ৩০৬ পেনালকোড আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সানজানার পিতা শাহীন আলমকে অভিযুক্ত (আসামি) করা হয়েছে।
নিহত সানজানা ওরফে মোসাদ্দিকার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তিনি পরিবারের সঙ্গে দক্ষিনখানের দক্ষিন মোল্লারটেক বটতলা রোডে ধানসিঁড়ি ভবনের একটি এ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করতেন। দু’বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সানজানা ছিল সবার বড়। আত্মহত্যার আগে ওই শিক্ষার্থী একটি চিরকুট লিখে গেছেন। চিরকুটে ওই ছাত্রী তার বাবাকে ‘পশু ও রেপিস্ট’ বলে উল্লেখ করেন। ইতিপূর্বে মারধর করায় তিনি তার বাবার নামে দক্ষিনখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলেন।
দক্ষিনখান থানা পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাপড় শুকানোর জন্য বাসার সিকিউরিটি গার্ডের কাছ থেকে ছাদের চাবি নেন সানজানা। পরে ওই ছাত্রী ১০তলা ভবনের ছাদে ওঠে সেখান থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েন। এতে সে গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার আগারগাঁওয়ে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকেল সাড়ে চার টার দিকে সানজানাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, সানজানার বাবা শাহীন আলম পাঁচ বছর আগে তাদেরকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে দু’পরিবারের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এরপর সানজানার মা দু’মাস আগে স্বামীকে ডিভোর্স দেন। এরপর শাহীন আলম সানজানার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফিসসহ আনুষঙ্গিক খরচ দেয়া বন্ধ করে দেন।
আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লেখে গেছেন ওই শিক্ষার্থী । চিরকুটটি উদ্ধার করেছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সাথে থাকা যায়। কিন্তু অমানুষের সাথে না। একজন অত্যাচারী রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা’।