দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রয় বন্ধের তাগিদ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য ও তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলেন, ‘খুচরা বিক্রয় বন্ধ হলে দরিদ্র ও কিশোর-তরুণ-যুবকদের মধ্যে তামাক ক্রয় কমবে। ফলে তাদেরকে ধূমপান ও মাদক থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে। এছাড়া বিদ্যমান তামাকসেবীদেরও অনেকে নিরুৎসাহিত হবেন। তামাক বিরোধী সচেতনতায় ব্যবহৃত সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে, একইসাথে তামাকের চোরাচালান বন্ধ হবে।’
আজ মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) আয়োজিত এক অনলাইন আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এই মতামত ব্যক্ত করেন।
এ অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ^স্বাস্থ্য) কাজী জেবুন্নেছা বেগম, ‘মানস’ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী এবং দি ইউনিয়নের কারিগরী পরামর্শক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম। ‘মানস’ এর প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।
কাজী জেবুন্নেছা বেগম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের ঘোষণাকে আমরা প্রতিজ্ঞা হিসেবে ধরে কাজ করছি। তামাকের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরো বেগবান করতে প্রয়োজন শক্তিশালী আইনগত ভিত্তি। এজন্য বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগপোযোগী করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে সকলের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে এবং পর্যালোচনা চলছে। খসড়া আইনে তামাকজাত দ্রব্যের খুচরা শলাকা বিক্রয় বন্ধের প্রস্তাবনাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধায় সংশোধনীতে এটি অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি আগামী প্রজন্মের স্বার্থে এই পদক্ষেপটি অত্যন্ত জোরালো ভূমিকা রাখবে।”
অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়ক/প্যাকেটে স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর প্রচলন শুরু হয়েছে। মূলত, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রয়ের ফলে সেই সতর্কবার্তাগুলো আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। সকল প্রকার তামাকজাত পন্য খুচরা বিক্রয় নিষিদ্ধ হলে স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর সুফল বাড়বে এবং ধূমপান ত্যাগে মানুষ উৎসাহিত হবে। কেননা, সহজলভ্যতা ও প্রাপ্যতা আমাদের শিশু-কিশোরদেরকে তামাক দ্বারা ভয়াবহ মাদকের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা আমাদের জন্য অশনিসংকেত!