আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তান হবে না। যত দিন আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হবে, ততোদিন এদেশের জনগণের জীবন সুরক্ষিত থাকবে।
আজ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার সততা, দক্ষতা, সাহসিকতা, দৃঢ়তা ও দেশপ্রেম বিশ^সভায় তাঁকে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আজ অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে। তাঁর সুদক্ষ ও ভিশনারি নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সকল প্রতিবন্ধকতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে উন্নয়ন-অগগ্রতি শান্তি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুরবস্থায় সৃষ্ট সেখানকার নাজুক পরিস্থিতিকে পুঁজি করে একটি চিহ্নিত মহল বাংলাদেশে উস্কানিমূলক মিথ্যাচার ও গুজব ছড়িয়ে জনগণের মাঝে আতঙ্ক-ভীতি সঞ্চারে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি বিএনপি ও তাদের দোসররা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের এক অপরাজনীতির ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কিছু কিছু চিহ্নিত গণমাধ্যম ও বিদেশি সাহায্যপুষ্ট কতিপয় তথাকথিত গবেষণা সংস্থা তাদের মনগড়া ও বাস্তবতা বিবর্জিত আষাঢ়ে গল্প পরিবেশন করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ধরনের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, এই জনপদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই সংগঠনের মূল ভিত্তি ও চালিকা শক্তি হলো এদেশের জনগণ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব প্রতিদিন নির্লজ্জভাবে ক্রমাগত মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন এবং গণমাধ্যম তাদের দেওয়া দূরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য-বিবৃতি ও মিথ্যা মন্তব্যের কোনো রকম সত্যতা যাচাই ছাড়াই প্রকাশ করে থাকে। স্বৈরশাসন ও অবৈধ ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া বিএনপি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বার বার ধ্বংস করে আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের নামে তারা জাতির সাথে প্রতারণা ও তামাশা করছে। মির্জা ফখরুল সাহেবদের মতো যারা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর কাউকে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও শিশু মুক্তিযোদ্ধা বানাবার অপপ্রয়াস চালায় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার-আলবদরদের রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান ও ক্ষমতার আসনে বসায়, তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা মানায় না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের অপকর্মের কারণেই বিএনপিকে বার বার জনরোষের মুখে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে। যারা রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার মুচলেকা দিয়ে দেশের আদালতে দ-িত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, তারাই আজ বিশে^র বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের দুর্নীতির কালো টাকা দিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি রাজনীতিতে তাদের দ্বিচারিতার সাক্ষ্য দেয়। এক সময় তাদের নেত্রীই বলেছিলেন, শিশু ও পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। রাজনীতিতে ভুল ট্রেনে ওঠা বিএনপি নেতৃবৃন্দ এখন পরিত্যক্ত প্লাটফর্মের অন্ধকার বগীর দিশেহারা যাত্রীর মতো অসংলগ্ন প্রলাপ বকছেন। সাংবিধানিক বিধান মতে অগণতান্ত্রিক উপায়ে কারও রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একমাত্র নির্বাচনের মধ্য দিয়েই রাষ্ট্রক্ষমতার রদবদল হয়। আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। বিএনপি নির্বাচন ও জনগণকে ভয় পায়। এজন্য তারা যে কৌশলই গ্রহণ করুক না কেন তাদের মূল লক্ষ্য থাকে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বিএনপি কখনোই গণরায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যাকা-ের পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতাকর্মী আত্মদান ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি বলেন, অতীতের ন্যায় আজও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোটি কোটি নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে বদ্ধপরিকর। কেউ যদি দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।