আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি বলেছেন, জেলখানায় জাতীয় চারনেতাকে হত্যাকান্ডের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে নব্য পাকিস্তানে রূপান্তর করা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর জাতীয় চারনেতাকে হত্যা দিয়ে প্রমাণিত হয় কোনো ব্যক্তিগত হত্যাকান্ড নয়, বাঙালিকে নেতৃত্বশূন্য করে স্বাধীন বাংলাদেশকে আবার নব্য পাকিস্তানে রূপান্তর করাই ছিলো স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক চক্রের মূল লক্ষ্য।
আগামীকাল জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে ১৯৭৫ সালে জাতীয় চারনেতার সাথে একই কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা আজ মঙ্গলবার এক ভিডিওবার্তায় স্মৃতিচারণে আমির হোসেন আমু এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জানান, ওইদিন রাত ২টা ২০ মিনিটে প্রথম ব্রাশ ফায়ারের শব্দ শুনতে পান। পরবর্তীতে ২০ মিনিট পর আবারো ব্রাশ ফায়ার। ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর কাতরানোর শব্দ শুনে জাতীয় সকল নেতার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঘাতকরা আবারো ব্রাশ ফায়ার করে এবং বেয়োনেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে তা নিশ্চিত করে। জেলের ভিতরে এমন নির্মম হত্যাকান্ড বিরল ঘটনা।
আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্র যে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়, তারই ধারাবাহিকতায় ৩রা নভেম্বর জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তাঁর নির্দেশিত পথে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে জাতীয় চারনেতা যে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন সেই অবদান কোনোদিন ভোলার নয়।
বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা ও জাতীয় চারনেতাকে হত্যার পর বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই হত্যাকান্ডের পর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা ইনডিমিনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে গলা টিপে হত্যা করে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন, বিভিন্ন দূতাবাসে পদায়ন, এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে তার আসল চেহারা উম্মোচন করে। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব না থাকা সত্ত্বেও তাকে দেশে এনে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয় জিয়াউর রহমান।
আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করে বাংলাদেশকে যারা নব্য পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করেছিল সেই শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল্যবোধকে আবার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বেই সকল সংকট উত্তরণ করে উন্নয়ন আর অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
ভিডিও বার্তায় তিনি জাতীয় চারনেতার স্মৃতির প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।