You are here
Home > জাতীয় > বঙ্গবন্ধুর ছবির কপিরাইট কেউ দাবি করতে পারবে না: হাইকোর্ট রায়

বঙ্গবন্ধুর ছবির কপিরাইট কেউ দাবি করতে পারবে না: হাইকোর্ট রায়

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং স্বাধীনতার যুদ্ধকালীন ছবির কপিরাইট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দাবি করতে পারবে না। এগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই রায় দেন।
বঙ্গবন্ধুর নামে বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে পর্যবেক্ষণসহ এ রায় দেন আদালত।
আদালতে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের পক্ষে ছিলন আইনজীবী অনিক আর হক। আর সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
রায়ের পরে আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা দুটি বইয়ের কপিরাইট নিয়ে মামলা হয়েছিল। আদালত বলেছে, বঙ্গবন্ধুর ছবি, মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত ছবি এবং স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ছবিগুলো কীভাবে ব্যবহার হবে- তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো আইন বা বিধান ছিল না। শুধু এই দুটি বই নয়, আরও বিভিন্ন বইয়ে ছবিগুলো ব্যবহার হয়েছে এবং বইয়ের কপিরাইট পাবলিশারদের নামে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটা খুবই স্বাভাবিক ছবিগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং মুক্তিযুদ্ধ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে। এখন আমরা সেই ছবিগুলোর কপিরাইট দাবি করব না, তবে বইয়ের কপিরাইট আমাদেরই থাকবে। এটাই আদালতের পর্যবেক্ষণ। তিনি আরো বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক যে বিষয়টি হয়েছে, সেটা হলো বঙ্গবন্ধুর পিকটোরিয়াল এবং ইমেজেস নিয়ে আদেশ। এবং স্বাধীনতার যুদ্ধকালীন ছবি ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ছবি দিয়ে যতগুলো বই প্রকাশ হবে, সেসব ছবির কপিরাইট রাষ্ট্রের থাকবে। এটা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দাবি করতে পারবে না। এই ছবিগুলো দিয়ে যখন বই বের হবে তখন বইয়ের কপিরাইট ব্যক্তির থাকবে।’
রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, আদালত আজ আদেশ দিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর ছবিতে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোনো স্বত্ব থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর ছবির স্বত্ব থাকবে জনগণের কাছে, রাষ্ট্রের কাছে। এখানে কেউ নিজের কপিরাইট দাবি করতে পারবে না।
যারা বইগুলো এরই মধ্যে পাবলিশ করেছেন, সেগুলো তারা আবার সংগ্রহ করে প্রতিটিতে লিখে দেবেন যে, বইগুলোতে ব্যবহার করা ছবির স্বত্ব প্রকাশকের নয়। তিনি বলেন, মুজিববর্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’-এর জন্য আটটি বই কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি বই নিয়েই জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছে নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে। ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’, ‘৩০৫৩ দিন’ বইটির পাশাপাশি অধ্যাপক নাসরিন আহমদ সম্পাদিত ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটিরও মেধাস্বত্ব চুরি করে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ নামে দুটি প্রকাশনা সংস্থার মালিক নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য বঙ্গবন্ধুর নামে প্রকাশিত দু’টি বইয়ে অবৈধভাবে গ্রন্থস্বত্ব এবং মেধাস্বত্বের অধিকার ব্যবহারের চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট এ রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিটে এ বিষয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করে এবং বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশও দেন।
ওই রুলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ রায় দেন।

Similar Articles

Leave a Reply

Top