ফার্নিচার ব্র্যান্ড ইশো এই বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করতে সম্পূর্ণ পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাঠ দিয়ে বানানো ‘লিমিটেড এডিশন’ বার্ড ফীডার তৈরির এক অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
ইশো’র পরিকল্পনা অনুসারে তারা মোট ৫০টি লিমিটেড এডিশন বার্ড ফীডার তৈরি করবে, যার অর্ধেক পুনর্ব্যবহারযোগ্য মেহগনি কাঠ এবং বাকিটা পুনর্ব্যবহৃত হোয়াইট অ্যাশ কাঠ দিয়ে তৈরি করা হবে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এবারের থিম ‘প্রজন্ম পুনরুদ্ধার’-এর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একটি সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে, ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার ও পরিবেশ সম্পর্কে আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করতে, ইশো একটি শীর্ষস্থানীয় এনজিও ‘গ্রিন সেভারস এসোসিয়েশন’ (জিএসএ)-এর সাথে পার্টনারশিপ করেছে। এই পার্টনারশিপের মাধ্যমে ইশো জিএসএ-কে বেশ কিছু বার্ড ফীডার অনুদান প্রদান করবে, যা তারা পাখিদের দেখাশোনা করে এমন স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করবে।
জিএসএ-এর সাম্প্রতিক অনেক প্রকল্পই গাছ ও পাখির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত যা এই পার্টনারশিপকে আরও জোরদার করে তোলে। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলো- সোহোরওয়ারদী উদ্যানে বিনা মূল্যে বৃক্ষ দান, কিছু প্রসিদ্ধ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পাখির স্নানের জায়গা তৈরি করা এবং সরকারী অফিসগুলোতে বাগান তৈরিতে সহায়তা ও পাখির স্নানের ব্যবস্থা করা।
ইশো এবং গ্রীন সেভারস অ্যাসোসিয়েশন উভয়ই নগরীর পাখিদের যত্ন ও সুরক্ষা নিশ্চিতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার বিষয়ে অবগত হয়। সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশে প্রায় ৭০০ প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে, শুধু প্রায় ৪০ প্রজাতির এমন পাখি সেই তালিকার বাইরে যারা মানুষের আশেপাশে বসবাস করছে। খুব সহজেই বোঝা যায় যে, প্রাকৃতিক সম্পদের উপর মানুষের হস্তক্ষেপই বন উজাড় এবং পাখিদের বিলুপ্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
এছাড়া, কিছুদিন আগেও ইশো কিছু রি-পারপাসড পণ্য বাজারে এনেছিল। তাদের লক্ষ্য ভবিষ্যতেও তারা এমন পণ্য তৈরি করবে। গত বছর তাদের ‘শতরঞ্জি প্রজেক্ট’-এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশি ঐতিহ্যকে তুলে ধরা, যা তারা রিসাইকেল্ড ফ্যাব্রিক এবং অন্যান্য কাঁচামাল দিয়ে তৈরি করেছিল। ঠিক একইভাবেই, ইশো তাদের ‘জোড়াসাঁকো’ কালেকশন তৈরি করে হোয়াইট অ্যাশ কাঠ দ্বারা, যা কেবলমাত্র এফএসসি প্রত্যয়িত সোর্স থেকে আসে। এর মাধ্যমে তারা বন ও পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং সতর্ক পরিচালনা নিশ্চিত করে।
জিএসএ-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও আহসান রনি বলেন, “আমরা সত্যিই ভীষণ আনন্দিত যে, ইশো’র মতো একটি ব্র্যান্ড পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাঠ দিয়ে বার্ড ফীডার তৈরি এবং আমাদের মাধ্যমে সর্বত্র এগুলো পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমাদের পূর্ববর্তী প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি যে আমাদের পরিবেশ এবং আশেপাশে যা কিছু রয়েছে, সেগুলোর মূল্যায়ন করতে কি কি করতে হবে এবং তার প্রয়োজনীয় কতটুকু। আমাদের সকলেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে পাখিদের রক্ষার্থে এগিয়ে আসতে হবে এবং এই উদ্যোগ সেটি বাস্তবায়নে সাহায্য করবে।”
ইশো’র মার্কেটিং হেড রোহান শ্রীনিভাসান বলেন, “ইশো-তে আমারা স্থায়িত্বের উপর বিশ্বাসী এবং গ্রীন সেভারস-এর সাথে পার্টনারশীপ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। পার্ক হোক কিংবা বাসায়, আমাদের বার্ড ফীডারে করে পাখিরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে নিয়মিত খেতে এবং বিশ্রাম করতে পারে সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য। এভাবেই আমরা আমাদের আশপাশ ও সমাজে আমাদের দায়িত্ব যেন ভুলে না যাই, তা নিশ্চিত করতে পারবো। এবং নিশ্চিত করতে পারবো এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবস-এর থিম ‘ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য, প্রজন্ম পুনরুদ্ধারের গুরুত্ব’-কে।”