নায়িকা পরীমনির ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার থানায় দায়ের করা মামলায় নারাজির আদেশ ১৩ ডিসেম্বর ।
নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং তুহিন সিদ্দিকী অমিকে জামিন দিয়েছে আদালত।
বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিনের আদালতে মামলার চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল।
পরীমণির উপস্হিতিতে তার পক্ষে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত (সুরভী) চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন দাখিল করেন।
আদালত নারাজির বিষয়ে পরীমণির জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘এ মামলার ভিডিও ফুটেজ নেই। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের চার্জশিটে রাখা হয়নি। দুই জন ম্যাজিস্ট্রেটকেও সাক্ষী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যারা ভিডিওটি করেছেন এবং ঘটনার সময় যারা ছিলেন তাদের সাক্ষী করা হয়নি। মামলাটা একতরফভাবে তদন্ত হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর শহিদ হোসেন ঢালী বলেন, ‘মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের তালিকায় রাখা হয়নি। মামলাটি পুনরায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলাটি তদন্ত করা প্রয়োজন। ‘
আসামিপক্ষের আইনজীবী কাওসার হোসেন নারাজি আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত হয়েছে। এখন পুনরায় তদন্তের প্রয়োজন নেই। ’
গত ১৪ জুন সোমবার সাভার থানায় পরীমনি ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর অভিযানে নামে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ১ হাজার ইয়াবা বড়ি, বিদেশি মদসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরীমনির তার এজাহারে বলেছিল, গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, অমি ও বনিসহ দুটি গাড়িতে উত্তরার দিকে যান। ‘পথিমধ্যে অমি বলে বেড়িবাঁধে ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডে তার ২ মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামতো আমরা ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে গাড়ি দাঁড় করাই। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। তখন অমি ভেতরে যায় এবং অমি অনুরোধ করে এখানের পরিবেশ অনেক সুন্দর, তোমরা নামলে নামতে পারো ।এজাহারে আরও বলা হয়ছে, ইতোমধ্যেই আমার ছোট বোন বনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলে আমরা ঢাকা বোট ক্লাবে প্রবেশ করে বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করি। টয়লেট হতে বের হতেই ১নং বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদেরকে ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ ১নং আসামি মদ্যপান করার জন্য জোর করেন। আমি মদ্যপান করতে না চাইলে ১নং আসামি জোর করে আমার মুখের মধ্যে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আমার সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই। ১নং আসামি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন ও আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ১ নং আসামি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারেন। তখন আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ১নং আসামিকে বাধা দিতে চাইলে তাকেও মারধর করে নীলাফোলা জখম করে। আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিতে গেলে আমার ব্যবহৃত ফোনটি টান মেরে ফেলে দেয়।
পুনরায় ফোনটি উঠিয়ে কল দিতে চাইলে আবারও ফোনটি টেনে ফেলে দেয়।