স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করা হবে। এই সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্প স্থাপন শুরু হবে যেখানে এই অঞ্চলে বসবাসকারী বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেসিসিআই) পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল বাসসকে বলেন, পদ্মা সেতু দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলকে সংযুক্ত করবে। এ সেতুর সড়ক ও রেল যোগাযোগের মাধ্যমে দেশে দ্রুত অগ্রগতি সাধিত হবে। পণ্য পরিবহন, বাণিজ্য, শিক্ষা ও ওষুধ খাতে ব্যাপক অবদান রাখবে এ সেতু।
তিনি বলেন, সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার ২ কোটি মানুষের আঞ্চলিক বৈষম্য কমিয়ে আনবে।
টুটুল বলেন, এখানে সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে, নতুন কল-কারখানা গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরের গুরুত্ব বাড়বে।
তিনি আরো জানান, ভোমরা, দর্শনা ও বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ এখন আরও সহজ হবে।
কেসিসিআই পরিচালক বলেন, এই অঞ্চলে এখন ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন এবং হযরত খান জাহান আলী (রহ.)-এর মাজার এবং বাগেরহাটে অবস্থিত ষাট গম্বুজ মসজিদ ঘিরে পর্যটনের ব্যাপক প্রসাার ঘটবে।
খুলনা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্যামল হালদার বাসসকে বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল যেমন উন্নয়নে এক ধাপ এগিয়ে যাবে, তেমনি ঢাকা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্য আরও বেগবান হবে।
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির চাকা মসৃণ হবে। মংলা বন্দরের কাজে গতি আসবে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে খুলনায় পণ্য পরিবহনের খরচ কমে যাবে। সুতরাং, মানুষ কম দামে পণ্য কিনতে পারবে।”
পদ্মাসতু খুলনা অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রত্যাশার প্রতীক উল্লেখ করে হালদার বলেন, মানুষ এখন খুলনা থেকে কম সময়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবে, পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে এখানে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেতুর টোলের হার কমানোর দাবি জানান তিনি।
খুলনা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল গাফফার বিশ্বাস বলেন, “পদ্মা নদীর ওপর সেতু দীর্ঘদিন ধরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা ছিল এবং তা বাস্তবায়িত হয়েছে।
তবে, খুলনার বন্ধ কলগুলো এখনই চালু করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তাহলে দক্ষিণাঞ্চল পূর্ণতা পাবে।
যেহেতু পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, ঢাকা-খুলনা রুটে পরিবহন ভাড়া শিগগিরই পুনরায় নির্ধারণ করা হবে, গাফফার যাত্রীদের জন্য বাস ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন, যা রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।
৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মূল সেতুসহ বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পটি ছিল দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে সংযুক্ত করার জন্য পদ্মা নদীর উপর দাঁড়িয়ে থাকা সেতুটিও একটি প্রত্যাশিত ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।