You are here
Home > জাতীয় > পদ্মা সেতুর আদলে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা

পদ্মা সেতুর আদলে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা

পদ্মা সেতুর আদলে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের প্রাথমিক নকশা তৈরি করে প্রস্তাবনা দিয়েছে কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। প্রস্তাবিত নকশা অনুযায়ী, সেতুর ওপরে থাকবে দুই লেইনের সড়ক এবং নিচে থাকবে দুই লেইনের রেললাইন। 
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর ওপর বিদ্যমান কালুরঘাট সেতু থেকে ৭০ মিটার উজানে অর্থাৎ উত্তরে নতুন সেতুটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা যা আগে প্রস্তাবিত সেতুর ব্যয়ের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি।
বুধবার (৬ জুলাই) সম্ভাব্য দাতা সংস্থা কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত এক্সিম ব্যাংকের নিয়োগ করা প্রতিষ্ঠান ইওসিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন বা দোহা প্রাথমিক সমীক্ষা শেষে সেতু নির্মাণের স্থান, নকশা, ব্যয় ও নির্মাণকাল নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তাবনা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছে।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে কাজ শুরুর সময় থেকে চার বছর। আর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একনেকে অনুমোদন, দরপত্রসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে তারা সেতুর কাজ শুরু করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সেতুটি নির্মাণ শেষ হতে বর্তমান সময় থেকে পাঁচ বছর অর্থাৎ ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে।
এর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষীত কালুরঘাট সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়ায় গতি ফিরেছে বলে মনে করছেন সেতু এলাকা অর্থাৎ চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।
প্রাথমিক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সম্মেলন কক্ষে বুধবার সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও কালুরঘাট সেতু নির্মাণ সংক্রান্ত ফোকাল পারসন পূর্ব রেলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. গোলাম মোস্তফাসহ রেলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রতিনিধি ছিলেন। সমীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান দোহা’র কর্মকর্তারা পাওয়ার পয়েন্টে সেতুর প্রস্তাবিত নকশা উপস্থাপন করেন।
সভা শেষে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রস্তাবিত নকশায় সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৭৮০ মিটার। এর মধ্যে নদীর বাইরে স্থলপথে থাকবে ৫ দশমিক ৬২ মিটার। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য হবে ১০০ মিটার। মোট পিলার থাকবে ৮টি। সেতুর উচ্চতা ১২ দশমিক ২ মিটার। এর ওপরের ডেকে থাকবে সড়ক এবং নিচের ডেকে রেললাইন। উভয়ই হবে দ্বিমুখী অর্থাৎ দুই লেইনের। সড়কে হেঁটে পারাপারের জন্য দুইপাশে আলাদা লেন থাকবে। সেতুর জন্য প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। 
কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) সহজ শর্তে পুরো টাকা বাংলাদেশ সরকারকে ঋণ হিসেবে দিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফোকাল পারসন রেলওয়ের কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা। 
তিনি জানান, নদীপথে সেতুর ওপরের অংশ পার হয়ে স্থলভাগে সড়ক হবে অর্ধবৃত্তাকারে। এর এক প্রান্ত থাকবে চট্টগ্রাম নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথার অদূরে জানে আলী হাট রেলস্টেশন পার হয়ে মূল সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। আরেক প্রান্ত থাকবে বোয়ালখালী অংশে বিদ্যমান কালুরঘাট সেতুর সংযোগ সড়কের সঙ্গে, তবে বর্তমান সংযোগ থেকে কিছুটা দূরে। আর ডাবল রেললাইনের একাংশ শুরু হবে জান আলী হাট থেকে, এর অপর অংশ থাকবে বোয়ালখালী উপজেলার গোমদ-ী রেলস্টেশনে।

Similar Articles

Leave a Reply

Top