নকল মাস্ক সরবরাহের মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার ও অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিন জাহানকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গতকাল মঙ্গলবার সিএমএম আদালতে শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক নিজামুদ্দীন ফকির জানান,মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি’র পরিদর্শক মোর্শেদ হোসেন খান গত ২৮ এপ্রিল আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
গত বছর ২৩ জুলাই রাতে বিএসএমএমইউয়ের প্রক্টর বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় প্রতারণার মামলা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এই মাস্কের কারণে কোভিড-১৯ সম্মুখযোদ্ধাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে।
মামলায় অভিযোগে বিএসএমএইউয়ের প্রক্টর মো. মোজাফফর আহমেদ বলেছেন, গত ২৭ জুন শারমিন জাহানকে ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। কার্যাদেশের বিপরীতে ৩০ জুন প্রথম দফায় ১ হাজার ৩০০টি, ২ জুলাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ৪৬০টি ও ১ হাজারটি এবং ১৩ জুলাই চতুর্থ দফায় ৭০০টি মাস্ক সরবরাহ করে। প্রথম ও দ্বিতীয় লটের মাস্কে কোনো সমস্যা ছিল না।
তবে তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় লট বিতরণ ও ব্যবহারে ত্রুটি পাওয়া যায় এবং মাস্কের গুণগত মান স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পাওয়া যায়নি। কোনো মাস্কের বন্ধনী ফিতা ছিঁড়ে গেছে, কোনো মাস্কের ছাপানো লেখায় ত্রুটিপূর্ণ ইংরেজি লেখা পাওয়া গেছে, কোনো কোনো মাস্কের নিরাপত্তা কোড ও লট নম্বর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে নকল বলে জানা গেছে। এ কারণে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে যে মাস্কের গুণগত মান নিম্নমানের ছিল।
মামলায় অভিযোগ আরো বলেন, বিএসএমএমইউ হাসপাতালে মাস্ক সরবরাহের অনুমতি পায় শারমিন জাহানের প্রতিষ্ঠান অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নকলমাস্ক সরবরাহ করে। এ মাস্ক ব্যবহার করে চিকিৎসক ও রোগী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। নকল মাস্ক সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বাদী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শারমিন জাহানকে ১৮ জুলাই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল। শারমিন ২০ জুলাই দেওয়া জবাবে দুঃখ প্রকাশ করেন,যা দোষ স্বীকারের শামিল। মামলা দায়েরের পরদিন (২৪ জুলাই) রাতে শাহবাগের একটি বাসা থেকে শারমিন জাহানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৫ জুলাই আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২৮ জুলাই রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর তিনি জামিন পান।