You are here
Home > জাতীয় > দেশে ভোজ্যতেলের ব্যাবহার জনপ্রতি বার্ষিক ২০ শতাংশ বৃদ্ধি

দেশে ভোজ্যতেলের ব্যাবহার জনপ্রতি বার্ষিক ২০ শতাংশ বৃদ্ধি

গত ৫ বছরে বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের ব্যাবহার জনপ্রতি বার্ষিক ২০শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০সালে ১৮.৪ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬ সালে জনপ্রতি ব্যাবহারের পরিমান ছিল ১৫.৩ কেজি।

গত ৪ বছরে দেশে ভোজ্যতেলের ব্যাবহার ৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালে এর পরিমান ২২.২ লাখ টন থেকে ২০১৯ সালে ৩০.৮ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। যদিও করোনা অতিমারিকালে এর ব্যাবহার ১.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৩০.৩ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে।

দেশে প্রচলিত সকল ভোজ্যতেলের মধ্যে পাম অয়েলের ব্যাবহার সর্বোচ্চ ৫৫ -৬০ শতাংশ।

“বাংলাদেশে ভোজ্যতেল ও চর্বির ব্যাবহার প্রবণতা” শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে এ সকল তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।

পাম অয়েল উৎপাদনকারী দেশসমূহের আন্তঃসরকারী সংগঠন কাউন্সিল অফ পাম অয়েল প্রোডিউসিং কান্ট্রিজ (সিপপ্স) ওয়েবিনারটির আয়োজন করে। সিপপ্সের “উন্নত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে সাস্টেইনেবল পাম অয়েল” শীর্ষক ওয়েবিনার সিরিজের অংশ হিসেবে আয়োজিত বাংলাদেশ ভার্সনটির লক্ষ্য ছিল পাম অয়েলের ক্রমবর্ধমান ব্যাবহার, এর গুনগত বৈশিষ্ট্য, বর্ধিত ভোজ্যতেলের চাহিদা মিটাতে এবং এসডিজি’র গুরুত্বপূর্ন কিছু লক্ষ্য অর্জনে এর ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা।

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মালয়েশিয়ান পাম অয়েল কাউন্সিলের আঞ্চলিক পরিচালক (বাংলাদেশ ও নেপাল) একেএম ফখরুল আলম। তিনি আন্তর্জাতিক ভোজ্যতেল বাজারে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশ আমদানীকৃত পাম অয়েলের উপর অনেকখানিই নির্ভরশীল। দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে এর আমদানী চাহিদাও বাড়ছে”।

তিনি জানান যে, করোনা অতিমারির কারনে ইদানীংকালে পাম অয়েল আমদানীতে কিছুটা নিম্নগতি পরিলক্ষিত হলেও, ব্যাবহারের মাপকাঠিতে এটি এখনো শীর্ষস্থানে রয়েছে।

তাঁর মতে সর্বাধিক ব্যাবহৃত ভোজ্যতেল হওয়া স্বত্বেও পাম অয়েলকে অনেক গুলো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে যার মধ্যে একটি হলো এর ইমেজ সংকট। এই সংকট উত্তরণে তিনি কার্যকরী প্রথাগত মিডিয়া ও সামাজিক মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ফখরুল আলম তাঁর বিশ্লেষণে বলেন, “বাজারে খুব কম সংখ্যক পাম অয়েল ব্র্যান্ড না থাকার কারনে এটি ততোটা দৃশ্যমান নয়। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ প্রয়োজন।”

উদ্বোধনি বক্তব্যে সিপপ্সের নির্বাহী পরিচালক এবং বিশিষ্ট ভোজ্যতেল বিশেষজ্ঞ ডঃ ইউসফ বাসিরন হলেন, “পাম অয়েল শিল্পে বাংলাদেশের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ন। দেশটি সর্ববৃহৎ পাম অয়েল আমদানীকারকদের একটি। পাম অয়েলের গুণগত মান, খাবারের স্বাদ এবং স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে এর ভূমিকার কারনে অনেক বাংলাদেশী খাবারেই এটি বহুলভাবে ব্যাবহৃত হচ্ছে যেমন বিরিয়ানি, খিচুড়ি ইত্যাদি। ঘরে রান্নাবান্না ছাড়াও পাম অয়েল খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরন শিল্প এবং হোটেলগুলোতে ব্যাপকভাবে ব্যাবহৃত হয়”।

তাঁর মতে, “পাম অয়েল সর্বাধিক স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর এবং সাস্টেইনেবল ভোজ্যতেল”। তিনি জানান যে, “উৎপাদনকারী হিসেবে আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত করতে চাই যে পাম অয়েল শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন হবে সাস্টেইনেবল অনুশীলনভিত্তিক, যার মূলে রয়েছে পরিবেশ, সমাজ ও অর্থনীতি বিষয়ক ভাবনা। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্মল হোল্ডারদের জন্য উন্নত জীবন এবং পরিবেশ সুরক্ষার মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখা হবে”।

দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া খাদ্য এবং কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সেন্টারের প্রধান ডঃ পুষ্প গিরিওনো তাঁর বক্তব্যে জানান যে, পাম অয়েলে স্যাচুরেটেড এবং আন-স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের একটি সমান ভারসাম্য বিদ্যমান। তিনি আরো জানান যে, ভিটামিন ই সমৃদ্ধ হওয়ার কারনে পাম অয়েল স্ট্রেস ও ডিএনএ ড্যামেজ প্রতিরোধে সক্ষম। বিশ্বব্যাপী ভিটামিন এ স্বল্পতা নিরসনেও পাম অয়েলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।

বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড এর সিনিয়র ব্যবস্থাপক ফয়সাল মাহমুদ পাম অয়েল বিপননে “কম্যুনিকেশন্স” এর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “ভোক্তাদের মধ্যে পাম অয়েলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো এবং এর উপকারিতা সকলের কাছে পৌছে দেয়ার জন্য সম্মিলিত ও টেকসই উদ্যোগ প্রয়োজন”। তিনি পাম অয়েলের সঠিক ইমেজ সৃষ্টিকে গুরুত্বপূর্ন বলে মনে করেন।

সিপপ্সের উপ-নির্বাহী পরিচালক ডুপিটো ডি-সিমামোরা তাঁর সমাপনি মন্তব্যে বলেন, “উৎপাদনকারী ও ভোক্তা উভয় দেশগুলোকেই ভোজ্যতেলের সাস্টেইনিবিলিটি নিশ্চিত করতে হবে”। পাম অয়েলের ইমেজ সংকট কাটাতে তিনি ডিফেন্সিভ না হয়ে অফেন্সিভ হওয়ার পরামর্শ দেন।

ওয়েবিনারটি সঞ্চালন করেন এসোসিয়েশন অফ পাবলিক সেফটি কম্যুনিকেশন্স অফিসিয়ালস (এপকো) এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াশ কনসাল।

Similar Articles

Leave a Reply

Top