স্বজনের সঙ্গে ট্রেনে ঢাকায় ফিরছিলেন নেত্রকোনার নাদিরা আক্তার পপি (৩৫)। তিনি ঠিকই ঢাকায় ফিরলেন তবে হরতাল সমর্থকদের দেয়া আগুনে শিশু সন্তান ইয়াসিনকে বুকে জড়িয়ে পুড়ে অঙ্গার হয়ে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) পুড়ে যাওয়া ট্রেন থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
জানা গেছে, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে নেত্রকোনা ছেড়ে আসে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। মঙ্গলবার ভোরে বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার পর দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে ট্রেনটি। চালক বুঝতে পারার আগেই তেজগাঁও এলাকায় চলে আসে ট্রেনটি। আতংকিত যাত্রীরা ট্রেন থামাতেই হুড়াহুড়ি করে নামতে শুরু করেন। ‘জ’ কোচে পরিবারের ৩ জনকে সঙ্গে ছিলেন পপি। বড় ছেলে মাহিন (৯) ও ভাই হাবিব ট্রেন থেকে নামতে পারলেও তিনি এবং তার শিশু সন্তান ইয়াসিন নামতে পারেননি। পৌনে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস এবং ভেতর থেকে ৪ জনের লাশ উদ্ধার করে। তাদের মধ্যে দুজন পপি ও তার সন্তান ইয়াসিন।
পপির দেবর প্রকৌশলী মিনহাজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার ভাবির কোলে ছিল ইয়াসিন। ট্রেন থেকে সবাই নামার জন্য হুড়াহুড়ি করেন। কিন্তু বাচ্চা নিয়ে নামতে পারেননি পপি। আগুন নেভানোর পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তখনও তার কোলে ছিল সন্তানের মৃতদেহ। একসঙ্গে পুড়ে দুজনের মৃত্যু হয়। দেখে বোঝা গেছে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সন্তানকে বুকে আগলে বাঁচানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু অনেক লোকের হুড়াহুড়ির মধ্যে পারেননি। সন্তানকে বুকে নিয়েই জীবন্ত পুড়ে মারা গেলেন।
তিনি আরও বলেন, পপির স্বামী মিজানুর রহমান কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়্যার সামগ্রীর ব্যবসা করেন। তিনি তেজতুরী বাজার এলাকায় থাকেন। তার সঙ্গেই থাকতেন পপি ও তাদের দুই সন্তান।
উল্লেখ্য, সপ্তাহ খানেক আগেই এই একই ট্রেন গাজীপুরে নাশকতার শিকার হয়।