পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ঢাকায় আবাসিক মিশন খোলার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি আহ্বান জানিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার করার লক্ষ্যে প্রিটোরিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আজ এখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানীতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি এম প্যানডরের সাথে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে তিনি একথা বলেন।
ড. মোমেন বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় সরকারি সফর করছেন।
জবাবে প্যানডোর বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্ব স্থাপন করতে পারে।
বৈঠককালে ড. মোমেন বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে। পাশাপাশি উভয় দেশ আইসিটি ক্ষেত্রগুলোতে জ্ঞান বিনিময় করতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, তৈরি পোশাক ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে যৌথ উদ্যোগ হতে পারে।
মোমেন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে একটি কৃষি সহযোগিতা কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে প্যানডরকে প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ভিত্তিক এই সংস্থার নাম রাখা যেতে পারে বঙ্গবন্ধু-ম্যান্ডেলা সেন্টার অন এগ্রিকালচারাল কোঅপারেশন।
মোমেন আরো বলেন, উভয় দেশ আইওআরএ, ব্লু ইকোনোমি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে।
এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন যে, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং এখন দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
তিনি দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত সিনিয়র কর্মকর্তা পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক বৈঠকের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকান মন্ত্রী আরো বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কারিগরি সহযোগিতা বিনিময়ের ক্ষেত্রে উভয় দেশের পারস্পারিক সহযোগিতার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সময় তিনি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা জাল, দারিদ্র দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাতে সাফল্যের প্রশংসা করেন।
প্যানডর আফ্রিকাসহ জাতিসংঘ মিশনগুলোতে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের অসামান্য অবদানেরও প্রশংসা করেন।
তিনি আইওআরএ কাঠামোর আওতায় বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে দক্ষিণ আফ্রিকার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শত-বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।
তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী উদযাপনের সময় বাংলাদেশে নেলসন ম্যান্ডেলার ঐতিহাসিক সফরের কথা উল্লেখ করেন।
বৈঠক শেষে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষের ইচ্ছা ব্যক্ত করে একটি যৌথ ইশতেহার স্বাক্ষরিত হয়।
