রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া তিন যাত্রীকে জরিমানা করে সাময়িক বরখাস্ত ট্রেন টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) শফিকুল ইসলাম ট্রেনে কাজে ফিরেই বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে ৪৯ হাজার ৯৫০ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দুটি ট্রেনে ১৬৫ জন বিনা টিকিটের যাত্রীর কাছ থেকে তিনি এই জরিমানা আদায় করেন।
গত রোববার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের পর গত সোমবার শফিকুল ইসলাম পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের টিটিজ হেডকোয়ার্টারে কাজে যোগ দেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা-চিলাহাটিগামী আন্তনগর রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনে তাঁকে প্রথম দায়িত্ব দেওয়া হয়।
যোগাযোগ করা হলে আজ বুধবার সকালে টিটিই শফিকুল ইসলাম বলেন, খুলনা-চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনে ঈশ্বরদী থেকে চিলহাটি পর্যন্ত পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়াসহ ৯ হাজার ১১০ টাকা জরিমানা আদায় করেন। এরপর চিলহাটি থেকে তিনি খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে দায়িত্ব পালন করেন। এই ট্রেনের বিনা ভাড়ার যাত্রীদের কাছ থেকে তিনি ৪০ হাজার ৭৬০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
এদিকে টিটিইকে বরখাস্তের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে। আজ দুপুরে যোগাযোগ করা হলে তদন্ত কমিটির প্রধান ও পাকশী বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (এটিও) সাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ তদন্তকাজ শেষ করার নির্ধারিত দিন। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, আগামীকাল বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া যাবে।’
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন একপ্রেস ট্রেনে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে বিনা টিকিটে তিন যাত্রী ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তাঁরা ট্রেনের এসি কামরায় বসে ছিলেন। তাঁদের কাছে ভাড়া চাইলে টিটির সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে ওই তিন যাত্রী রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। শফিকুল ইসলাম তাঁদের কাছ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা ভাড়া নিয়ে এসি কামরা থেকে শোভন কামরায় পাঠান। ওই তিন যাত্রী শোভন কামরাতেই ঢাকায় পৌঁছান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মুঠোফোনে টিটিই শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।