কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরকে নির্যাতনের কোনো চিহ্ন পায়নি মেডিক্যাল বোর্ড।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।তবে সেই রিপোর্টে কি লেখা আছে তা তিনি বলতে পারছি না বলেও জানান।
কিশোরকে ২০২০ সালের ২ মে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা। পরবর্তীতে ৫ মে র্যাব-৩, সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মিনহাজসহ ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। এছাড়া আরও অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় গ্রেফতারের পর তাকে নির্যাতনের অভিযোগ আনেন কিশোর।
এ মামলায় গত ১৩ জানুয়ারি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে রমনা থানা পুলিশ। যেখানে জুলকারনাইন খান ওরফে সামিসহ অন্য আটজনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। অব্যাহতির সুপারিশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান, জার্মান প্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, নেত্র নিউজের সম্পাদক ও সুইডেন প্রবাসী তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরি প্রবাসী জুলকারনাইন শায়ের খান ওরফে সামি, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম ও ফিলিপ শুমাখার।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন মামলাটি অধিকতর তদন্তে সিটিসিকে নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়।
এই মামলায় কিশোর ১০ মাস কারাভোগের পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে চলতি বছর ৪ মার্চ তিনি মুক্তি পান।
একইসঙ্গে গ্রেফতার লেখক মুশতাক আহমেদ চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর কারাগারে মারা যান। এনিয়ে দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
গত ৪ মার্চ কিশোর মুক্তি পেয়ে ১০ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে ২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে এই মামলাটি দায়ের করেন তবে মামলার আবেদনে কারও নাম উল্লেখ করেননি।
এরপর আদালতের নির্দেশে গত ১৬ মার্চ কিশোরের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ। বোর্ডের সদস্যরা হলেন- ঢামেকের নাক কান ও গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি (প্রধান), মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজ সরদার, অর্থোপেডিক এবং টমাটলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফখরুল আমিন খান।
এই মেডিক্যাল বোর্ড কিশোরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে গত ২০ মার্চ আদালতের সংশ্লষ্ট শাখায় প্রতিবেদনটি জমা দেন। মামলার নির্ধারিত তারিখ ১৪ এপ্রিল করোনার কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তা উপস্থাপন করা হয়নি।
নিয়মিত আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হবে। এরপর আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেবেন।
এদিকে আদালত সূত্রে জানা যায়, মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়া হলেও পিবিআই তদন্ত রির্পোট জমা দেয়নি।