প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নূরুল হুদা বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কঠিন হলেও এটাই একমাত্র সমাধান।
আজ নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’র (আরএফইডি) উদ্যোগে ‘আরএফইডি টক উইথ কে এম নূরুল হুদা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
আরএফইডি সভাপতি সোমা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কাজী জেবেল। এ সময় ইসি সচিবালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির খোন্দকার, ইসি সচিবালয়ের যুগ্মসচিব (পরিচালক জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে’ হওয়ার যে অভিযোগ, সেটির কোনো সত্যতা নেই।
তিনি বলেন, ‘এটা তো অভিযোগ আকারে থেকে গেছে। আদালতের ইন্সট্রাকশন ছাড়া হয় না। অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। আমি তো দেখিনি, আপনিও দেখেননি, আপনারা দেখেছেন? এটা একটা অভিযোগ। এখন তদন্ত হলে আদালতের নির্দেশে হয়তো সেটা বেরিয়ে আসতো। সেটা হলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেতো। হয়তো সারাদেশের নির্বাচন বন্ধ হতো।’
নূরুল হুদা বলেন, দিনের ভোট রাতে হয়েছে এ বিষয়ে কোনো প্রার্থীসহ কেউ নির্বাচন কমিশনে সরাসরি কোনো অভিযোগ করেননি। এমনকি এ অভিযোগ নিয়ে কেউ আদালতেও যাননি। ফলে আমরা ধরে নিচ্ছি, দিনের ভোট রাতে হওয়ার বিষয়টি নেহায়েত একটি অভিযোগ।
সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কেউ কোথাও রাতে ভোট হওয়ার বিষয়টি দেখেননি, এমনকি কোনো সাংবাদিকও রাতে ভোট হয়েছে, তা দেখেছেন কিংবা লিখেছেন বলে আমাদের জানা নেই। নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ হয়ে গেলে আমাদের কিছু করার থাকে না। কারণ, এটা আইন। প্রকৃতপক্ষে আমাদের আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগও ছিলো না।
তিনি বলেন, বদিউল আলম মজুমদারকে (সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক) ব্যক্তিগত সুবিধা না দেওয়ায় তিনি কমিশনের সমালোচনা করছেন। শামসুল হুদা কমিশনের আমলে বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কমিশনে।
সিইসি বলেন, ‘আমি কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি আমার কাছে কয়েকবার এসেছিলেন আমাদের সঙ্গে কাজ করতে। আমি তাকে কাজ করার সুযোগ না দেওয়ায় তিনি কমিশনের সমালোচনা করেন।’
তার অধীনে কমিশনের কাজের নানা দিক তুলে ধরে সিইসি বলেন, ৭ কোটি ৬ লাখের বেশি স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। ৫ কোটির বেশি বিতরণ করা হয়েছ। ইসির অনেকগুলো আইনি বিধি বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের ভোটার তালিকা সংশোধন হয়েছে। সমালোচনা গঠনমূলক হলে গ্রহণ করা হয়েছে।
নূরুল হুদা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল না, আমরা আমাদের মত করে কাজ করতে পেরেছি। নির্বাচনে সংঘর্ষ, সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়, যদি না প্রার্থীরা সহনশীল হয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শতভাগ ইভিএমে করা সম্ভব হবে না, তবে ৫০ ভাগ করা যেতে পারে।
গত পাঁচ বছরে কমিশন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজেকে ‘শতভাগ সফল নয়’ দাবি করলেও আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না বলে জানান নূরুল হুদা।