নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের শেষ পর্যায়ে ইভিএমে ধারণকৃত ফলাফল পাল্টে দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেয়া আজ এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব (পরিচালক জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মাত্র ৩৪৩ ভোটে পরাজিত প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষে জনৈক ব্যক্তি ফলাফল ঘোষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে একটি টেলিফোন কলে ফলাফল পাল্টে দেয়া হয়েছে মর্মে বক্তব্য দিয়েছেন। এতে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে অনাকাক্সিক্ষত বিতর্ক সৃষ্টির অপপ্রয়াস হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের শেষ পর্যায়ে ইভিএমে ধারণকৃত ফলাফল পাল্টে দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
উল্লেখ্য, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ১০৫টি কেন্দ্রের ফলাফল কেন্দ্রেই ঘোষণা করা হয়েছে এবং কেন্দ্রভিত্তিক ইভিএম থেকে মুদ্রিত ফলাফল এবং প্রার্থীদের এজেন্ট এবং প্রিজাইডিং অফিসার স্বাক্ষরিত ফলাফলের সকল কপি প্রার্থীদের এজেন্টদেরকে সরবরাহ করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রিজাইডিং অফিসার নিজে রিটার্নিং অফিসারের নিকট এসে একটি কপি সরবরাহ করেন। রিটার্নিং অফিসার একত্রিকরণ করে ফলাফল ঘোষণা করেন। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীদের ইভিএম থেকে মুদ্রিত সকল কেন্দ্রের ফলাফল এবং প্রার্থীর এজেন্ট এবং প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত ফলাফলের কপি কমিশনের ওয়েবসাইটে (www.ecs.gov.bd) আপলোড করা হয়েছে।
কমিশনের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচনের সময় উত্তীর্ণ হওয়ার পর রিটার্নিং অফিসারের পক্ষ থেকে বেসরকারি ফলাফল প্রকাশের শেষ পর্যায়ে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হঠাৎ করে উত্তেজনা, স্লোগান-পাল্টা স্লোগান ও হাতাহাতি হলে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে রিটার্নিং অফিসার নির্বিঘেœ চূড়ান্ত ফল প্রকাশে বাধাঁপ্রাপ্ত হচ্ছিলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। কোনো কোনো পত্র-পত্রিকার নিবন্ধ এবং সোস্যাল মিডিয়াতে বক্তারা এই সময়কে এক বা দেড় ঘন্টার বিলম্ব বলে রহস্য, অঘটন ইত্যাদির ইংগিত করার চেষ্টা করেছেন। বিষয়টি মোটেই তা ছিল না। বিরাজিত অবস্থায় চূড়ান্ত ফল প্রকাশে উল্লখিত কারণে কম-বেশি ১৫ থেকে ২০ মিনিট বিলম্ব হয়েছিল।
নির্বাচনকে নির্বিঘœ ও স্বচ্ছ করতে প্রথমবারের মত প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্বাচনকে অধিকতর নিরপেক্ষ করার উদ্দেশ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় কর্মরত নির্বাচন র্কমকর্তাদেরকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব না দিয়ে বাহির থেকে কর্মকর্তাদের সাময়িকভাবে এনে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীদের তথ্য ধারণ ও পরিবেশনের জন্য অবাধ সুযোগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সহিংসতার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ভোটারদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মত ছিল। ৫৯ শতাংশ ভোটের হারকে কেউ কেউ কম বলে গণমাধ্যমে সমালোচনা করেছেন। বলা আবশ্যক, ইভিএমে কারো পক্ষে দুবার বা অপরের ভোট প্রদান করা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বিধায় ব্যালটে ভোটের চেয়ে কম হতে পারে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
কমিশনকে তাদের দায়িত্ব আরও দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে পালনে সহায়তা করতে নির্বাচন কমিশন সকলের আন্তরিক ও গঠনমূলক পরামর্শ প্রত্যাশা করে।